পপাত চ
পায়ের নিচে ঠক্ করে
একটা আওয়াজের সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পারলাম শরীরের ভরকেন্দ্র ডিস্লোকেটেড হয়ে গেছে।
বিপজ্জনক ভাবে সামনের দিকে ঝুঁকে পড়েছি। পড়ছি বলা চলে। সিটি সেন্টারের পাথর
বাঁধানো রাস্তার সঙ্গে সাধারণত আমার চোখের দূরত্ব থাকে ফুট পাঁচেক, অবিশ্বাস্য দ্রুততায়
সে দূরত্ব কমে আসছে। চারফুট, তিনফুট, দু’ফুট। আত্মরক্ষার নির্ভুল প্রতিবর্ত
ক্রিয়ায় আমার হাতের মুঠো খুলে গেছে। আগে বাঁচলে তবে তো ব্যাগেটের নাম। দোলের দিন
কেউ রং দিতে এলে যে ভঙ্গিতে না বলতে হয়, সেই ভঙ্গিতে আমার দুই হাতই এখন শরীরের
সামনে। কিন্তু না বললেই বা শুনছে কে।
সেকেন্ডের মধ্যে পারপেন্ডিকুলার
অবস্থা থেকে যখন শরীরটা রাস্তার সঙ্গে মিশে গেল, চশমাটা নাক থেকে ছিটকে গেল, পার্সের
খোলা জিপের ভেতর থেকে খুচরো পয়সা এদিকসেদিক ঠুংঠাং গড়িয়ে গেল, তখন যুক্তি মানলে
আমার ব্যথাবেদনার কথাটাই প্রথমে মাথায় উদয় হওয়ার কথা। কিন্তু মানুষের মন, কবেই বা আর যুক্তি মেনে চলেছে। সব ব্যথা ছাপিয়ে প্রথমেই
আমার যেটা মনে এল সেটা হচ্ছে, হে ভগবান, সবাই আমাকে দেখছে। দেখছে আর হেসে খুন হচ্ছে।
মনে হওয়ার কারণ আছে।
কাউকে পড়ে যেতে দেখলে আমি নিজে একসময় হাসি চাপতে পারতাম না। এখনও পুরোটা পারি না,
তবে আগের থেকে অনেক বেশি পারি। অট্টহাসির জায়গায় মুচকি হেসে ক্ষান্ত দিই। নাক
মোলার ছুতোয় হাসি আড়াল করি। অফ কোর্স, পড়ে গিয়ে কারও মাথা ফেটে গেছে, ফিন্কি দিয়ে
রক্ত ছুটেছে, চারদিক থেকে ধর্ ধর্ তোল্ তোল্ জল আন্ ডাক্তার ডাক---এইসব পরিস্থিতিতে
আমার মোটেই হাসি পায় না। কিন্তু একজন সুস্থসবল প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ চলতে চলতে বলা
নেই কওয়া নেই হঠাৎ শুকনো ডাঙায় ধপাস্ করে ভূমিশয্যা নিলে, হাসির আমি কোনও দোষ
দেখি না। যারা হাসে না তারাই পাগল।
কিন্তু লোকে দেখে।
বিশেষ করে যিনি পড়েছেন, তিনি। ক্লাস ফাইভ নাগাদ হবে, স্কুল থেকে ফিরছিলাম। ট্রেনে
মাঝারি ভিড় ছিল। তার মধ্যে গেটের ঠিক মধ্যিখানে এক লেবুওয়ালা তার প্রকাণ্ড লেবুর
ঝুড়ি রেখে এদিকসেদিক “দিদি লেবু নিয়ে যান, দশ টাকায় পাঁচটা, চিনির মতো মিষ্টি, না
নিলে পস্তাবেন...” এই সব করে বেড়াচ্ছিল। ঝুড়িভর্তি এই বড় বড় নাগপুরী লেবু। আমরা
সবাই ঝুড়ি বাঁচিয়ে কোনওমতে একপায়ের ওপর ভর দিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। ট্রেন কোন্নগরে ঢুকব
ঢুকব করছিল। এমন সময় লাইনের ওপর গরুটরু এসে পড়েছিল নির্ঘাত, ড্রাইভার মোক্ষম ব্রেক
কষলেন। জাড্যের তাড়নায় কামরাশুদ্ধু লোক পাঁচহাত করে এগিয়ে গিয়ে হ্যান্ডেল, এরওর শাড়ির
আঁচল, বিনুনির গোছা ইত্যাদি ধরে কোনওমতে সামলাল। একজন মোটামতো ভদ্রমহিলা সামলাতে
পারলেন না। টাল খেয়ে বসে পড়লেন, ঠিক কমলালেবুর ঝুড়ির মধ্যিখানে।
আমি এতেও হাসতাম না
কিন্তু গোলমাল বাধাল লেবুওয়ালা। কামরার ওই প্রান্ত থেকে পুরো ঘটনাটা দেখে তার
মুখের ভাব যে রকম হল, তাতে আর হাসি চেপে রাখা গেল না। লেবুর ঝুড়ির ভেতর থেকে ভদ্রমহিলা দু’হাত আকাশে তুলে
হ্যাঁচকা দিয়ে দিয়ে ওঠার ব্যর্থ চেষ্টা করে চলেছেন, আশেপাশের কিছু লোক ফাঁকা সমবেদনা
দেখিয়ে “আহা আহা কী হল, লাগল নাকি” ইত্যাদি বলছে, আর দূর থেকে লেবুওয়ালা “গেল গেল”
চিৎকার করে দৌড়ে আসছে, এই সব দেখে সোমা দাসের গলা জড়িয়ে হাসতে হাসতে আমার পেট ফাটার জোগাড় হল। ভদ্রমহিলা অবশেষে ঝুড়ির ফাঁদ থেকে মুক্তি পেলেন। লেবুওয়ালা হায় কী হল বলে
ঝুড়িভর্তি লেবুর ওপর হুমড়ি খেয়ে পড়ল, আর ভদ্রমহিলা ভাঁটার মতো চোখ করে আমার দিকে
ঘুরে দাঁড়ালেন।
তারপর ঝাড়া তিন
মিনিট ধরে আমাকে তিনি যে বক্তৃতাটা দিলেন সেটার মর্মার্থ হল যে এসব ছেলেপুলে বড়
হলে একএকটা চেঙ্গিজ খানে পরিণত হবে। একটু মায়ামমতা নেই, ভদ্রতাসভ্যতার কথা তো
ছেড়েই দিলাম, মানুষকে পড়ে যেতে দেখে কোথায় টেনে তুলবে তা না হ্যাহ্যা করে হাসছে।
আমি এখনও মনে করি
ভদ্রমহিলা আমার প্রতি অন্যায্য রাগ করেছিলেন। আমি যদি ওঁর জায়গায় থাকতাম আর উনি
আমার জায়গায়, তাহলে কেমন না হেসে থাকতে পারেন দেখতাম।
আপনার আছাড় খাওয়ার
প্রবণতা কী রকম? আমার অত্যন্ত বাড়াবাড়ি রকমের বেশি। আমি শুধু পথ চলতে গিয়ে ধুপধাপ
পড়িই না, ভুলভাল জায়গায় পড়ে যাওয়ার অলৌকিক ক্ষমতা আছে আমার। রাজধানীর তিনতলার
বার্থ থেকে পড়ে যাওয়ার গল্পটা তো আগেই বলেছি। তাছাড়াও বিস্তর উদাহরণ আছে। টিউশন
থেকে ফেরার পথে সাইকেলের হ্যান্ডেল হঠাৎ রহস্যজনকভাবে ঘুরে গিয়ে ঘাড় মটকে পড়বি তো
পড় ঠিক সেই মোড়ের মাথাতেই পড়ত, যেখানে চারটি ফাজিল ছোকরা বসে গুলতানি মারছে।
সাইকেলের ওপরে আমি বসে থাকতাম, কাজেই আমারও রাস্তায় গড়াগড়ি না খেয়ে উপায় থাকত
না। সবথেকে খারাপ ব্যাপার যেটা হত, কাকুর বয়সী ছেলেগুলো দৌড়ে এসে ভয়ানক বিনয়ী গলায়,
“দিদি, খুব বেশি লেগেছে কী?” ইত্যাদি পিত্তি-জ্বালানো প্রশ্ন করত।
কাজেই সিটি
সেন্টারের বেকারির দোকানের পাপোশে হোঁচট খেয়ে যখন ভূপতিত হলাম তখন আমার ব্যথার
থেকেও লজ্জা হল একশোগুণ বেশি। দোকানের এক কর্মচারী বেরিয়ে এসে গড়িয়ে যাওয়া
কয়েনগুলো কুড়িয়ে এনে দিলেন, আর একজন সহৃদয় ভদ্রমহিলা লাইনে আমার ঠিক আগে দাঁড়িয়েই
পাঁউরুটি কিনছিলেন, আহা আহা করে ছুটে এসে আমাকে ধরে তুললেন। ধন্যবাদ-টন্যবাদ দিয়ে
কোনওমতে অকুস্থল থেকে পালালাম। বাড়ির কাছে এসে সুপারমার্কেটে ঢুকে বাঁধাকপি কিনছি,
দেখি এক ভদ্রলোক একবার আমার দিকে তাকিয়েই দ্রুত চোখ সরিয়ে নিলেন। ইস্, নির্ঘাত
সিটি সেন্টারে ছিল। আমাকে পড়ে যেতে দেখেছে। জঘন্য।
বাড়িতে এসে পত্রপাঠ
কলকাতা দিল্লি বম্বেতে ফোন করে জানিয়ে দিলাম যে আমি পড়ে গেছি। না না, চিন্তার কিছু
নেই। ওই যেমন হয়---সামান্য ব্যথা, হাঁটুতে একটি আধুলি সাইজের বেগুনিরঙের কালশিটে, আর দুই হাতের তেলোর ডিফেন্সিভ উন্ডস্। এঁরা যতই হোক বাড়ির লোক। পড়ে গেছি শুনে হাসলে আমার
থেকে এঁদের কপালেই দুঃখ বেশি। সকলেই যৎপরোনাস্তি সমবেদনা জানালেন। আমার আহত ইগো
অবশেষে শান্তি পেল।
Ha, ha ha.. eta pore keboli haschhi obossoi tumi pore gachho bole noi tomar rosik kalomer (naki keyboard) jonye.
ReplyDeleteeitai bhalo je khub beshi lageni tomar ... :-)
ইচ্ছাডানা, সে আমি বুঝেছি যে আপনি আমার পড়ে যাওয়ার কথা ভেবে হাসছেন না। তাহলে আমি আর রক্ষা রাখতাম না।
Deleteআমি কিন্তু 'বিশ্রী ভাবে খ্যাক করে' হাসছি |
ReplyDeleteকী আর করা যাবে। স্যাড।
DeleteKeu porey gele ami kokkhono hashini ... borong gombhir hoye thaki ar jiggesh kori byatha legeche ki na ... ar sheti hobey na tomar eyi lekha porar por.
ReplyDeleteGorar dike bhabchilam tumi bujhi injured hoyecho ... ar shesher dikey eshe ar parchina ... eto hashchi je ar kichu likhte parchina. Tomar byatha hnaatu ar haath taratari shere uthuk eyi kamona e kori.
PS: Recently Vishakhapatnam giyechilam ... beach e neme e joler kache chhutey giyechi ... boro boro dheu ar sharp slope er beach ... jeyi na jol e haath debo bole jhukechi omni shob kemon ulto palta hoye gelo ar mathar uporer akash ta onekta kache bole mone holo ... 2 second er byapar bodh hoye ... dekhi dhupp kore boshe tarpor chitpotaaang hoye giyechi. :D
চিৎ হয়ে পড়লে, এই যেমন তুমি পড়েছ, বা কলার খোসায় আছাড় খেলে, ব্যাপারটা আরও বেশি হাসির হয়। তোমার সঙ্গে যিনি ছিলেন তিনি কি হেসেছিলেন শর্মিলা? নাকি ছুটে এসে তুলেছিলেন? তবে একটা জিনিস কিন্তু বলতেই হবে, সমুদ্রের সঙ্গে হুটোপাটি করে পড়ে যেতে কিন্তু নিজেরও দারুণ মজা লাগে, তাই না?
DeleteNah ... amder e ek bondhu o onar stree shonge chilen ... dujone na dekhar bhaan korechilen ... tobey amar bor ke chutey ashte e holo. :D
DeleteSomudro r shonge hutopati ar holo koi ... jol e haat dite giye e eyi obostha ... ek phnota jol lageni kintu bheja balite jamakapor er khub kharap obostha holo.
Issh ... ekhon bhablei lojja korche ... ar kemon ekhane shob likhe fellam. Palai. :-)
হাহা, আরে লজ্জা কীসের শর্মিলা। স্নান হল না এইটা একটা বাজে ব্যাপার হল বটে। পরের বার নিশ্চয় করে স্নান কোরো।
Deleteও--মা,ব্যাপারটা ভিশুয়ালাইজ্ করে ফেলেছি তাই,খিক্ খিক্,পড়ে গেলে?হাসিটা গিলে ফেলে, আহারে--, কি ভাবে পড়লে? এবার কিন্তু সত্যিই বলছি, লাগেনি তো?বাড়ি থেকে আসার সময় সঙ্গে আর্নিকা বা ফেরাম ফস এনেছিলে কি? সেটা খেয়েছো তো? আমি তোমার সমব্যথী কুন্তলা,কারণ কয়েকদিন আগে আমিও হঠাৎ পপাত হলাম। রাস্তা হলে কেউ চেনেনা বলে নিশ্চিন্ত হতাম, কিন্তু এ একেবারে এস্টেটের ভিতর। চারদিকে চেনা লোক। আমার মত পৃথুলা প্রায় বৃদ্ধ একজনের এই দশা হলে দৃশ্যটা কিরকম বল দেখি? চিৎপাৎ হবার দৃশ্যটাকে বাঁচাতে গিয়ে সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ার দরুণ হাঁটুতে প্রচন্ড লাগল। চারদিক থেকে সাহায্যের হাত এসেছিল বটে, সেগুলোকে বাতিল করে দাঁত চেপে ওঠার চেষ্টা করছি, এমন সময় আমার ড্রাইভার ছেলেটি বলছে, কাকীমা আমার হাত ধরে ওঠো। রোগা টিংটিঙে ছেলেটার কথা শুনে সেই মুহূর্তে অত যন্ত্রণার মধ্যেও আমি হাসি আটকাতে পারিনি। আমার পরিচিত একজন প্রায়ই ঘুমাতে ঘুমাতে বিছানা থেকে মাটিতে পড়ে যেত আর সেইখানেই ঘুমাতে থাকত। এমন পড়ায় কেউ না হেসে কি থাকতে পারে?
ReplyDeleteএই সময় আমার নিজের পড়ার আরও কত গল্প মনে পড়ছে আর নিজেই হেসে কুটিপাটি হচ্ছি। যে যাই বলুক, কেউ পড়ে গেলে হাসাটা প্রায় স্বতঃসিদ্ধ। তবে হাঁটুর কালশিটেকে যেন খুব অবজ্ঞা কোরোনা।
এই রে, ব্যথা পেলে আর ব্যাপারটা হাসির থাকে না। এখন হাঁটু কেমন আছে? খাট থেকে পড়ে গিয়ে ঘুমোনোর ব্যাপারটা বেশ ইন্টারেস্টিং। অনেকে শুনেছি ঘুমোতে ঘুমোতে নিজে পড়ে না, কিন্তু পাশের লোককে লাথি মেরে ফেলে দেয়। তার থেকে এটা অনেক ভালো।
Deleteএখন আর ব্যথাট্যথা কিছু নেই মালবিকা। কালশিটেও প্রায় মিলিয়ে এসেছে। কাজেই নো চিন্তা।
এমনিতে কাউকে পড়ে যেতে দেখলে আমি প্রায় হাসি না বলা যায়। বরঞ্চ ব্যাথা-বেদনার কথাটাই আগে মনে হয়। তবে আমার কিছু অসভ্য বন্ধু আছে (তা বলে ভেবো না তোমাকেও অসভ্য বলছি), যারা আগে ঝাড়া সাত মিনিট হেসে নেয় তারপর এসে তোলে। আমার মা অব্দি হাসে আমি পড়ে গেলে, কাকে আর কী বলব!
ReplyDeleteআমার সাথে যেটা প্রায় প্রতিদিন হয় সেটা হল, রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে হঠাত পা মচকে যায়। আজ পর্যন্ত পপাত চ হইনি, কিন্তু হব হব অনেকবার হয়েছে। বর হতভাগাও হাসে। :-(
আহা রে, আত্মীয়বন্ধুর ব্যাপারে (পড়ে যাওয়ার প্রসঙ্গে) তুমি বেশ আনলাকি দেখতে পাচ্ছি প্রিয়াংকা। আমি প্রার্থনা করছি যেন তোমার বন্ধুরা এরপর তোমার সামনে ধুপধাপ পড়ে আর তুমি হা হা করে হেসে প্রতিশোধ নিতে পার।
DeleteEi. Amaro ei beram achhe. Hnatte, cholte, uthte, boshte majhe majhei pore jai. Amar abar haatu mochkano beram achhe. Ekbar apishe hnatu mochke pore giye, lojjar matha kheye hnachor pnachor kore uthchhi, omni onyo hnatutao nore galo, ar abar pore gelam. Erpor amar boss-o haashi samliye rakhte pareni. :/
ReplyDeleteহাই ফাইভ বিম্ববতী। বস্ বেচারার দোষ নেই, তোমার সেকেন্ডবার পড়ে যাওয়ার দৃশ্যটা কল্পনা করে আমিও হাসছি।
Deleteকুন্তলা, আপনার ট্রেনের ভিতরে ভদ্রমহিলার পড়ে যাওয়ার গল্প টা পড়ে খ্যাক খ্যাক করে হেসে ফেললাম। আর আপনার পড়ে যাওয়া নিয়ে এই মুহূর্তে কিছু বলছিনা। ঃ-| ওটা মুলতুবি থাক। আচ্ছা, মোটা লোকজন পড়ে গেলে কি সামহাউ বেশী হাসি পায়? মিনিবাসে একবার দেখেছিলাম, এক ভদ্রমহিলা, বেশ বিপুলা, ঠিক ওই ড্রাইভারের কেবিনে এঞ্জিনের ধারে যে লম্বা সিট টা থাকে, তার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। বাসও ঘ্যাঁচ করে ব্রেক মারলে, তিনিও টাল সামলাতে না পেরে একটা ঘূর্ণিঝড় তুলে সামনের সিটে বসা ভদ্রলোকের কোলে ঝপ করে বসে পড়লেন। এবং পড়েই, পরমুহূর্তেই যেন কিছুই হয়নি, এরকম একটা ভাব করে অম্লানবদনে নেমে চলে গেলেন। কোনো এম্ব্যারাস্মেন্ট, কোনো বিকার নেই। আমি প্রাণপনে হাসি চাপছিলাম, কারণ মনে হয়েছিল এরকম স্ট্রীট-স্মার্ট্নেস টা প্রশংসনীয়, আমার নিজের বোধ্করি হত না। আর সত্যি ই , পড়ে গেলে ব্যথা বেদনা ছাপিয়ে ধ্যাড়ানোর ফিলিংস টা সবার আগে হয়।
ReplyDeleteএই রে, আবার গল্প মিলে গেছে। বাসের ব্রেক কষায় কোলে বসে পড়ার গল্প। তবে মিলের ওইখানেই শেষ। আপনার গল্পের বিপুলা সত্যি স্মার্ট, সন্দেহ নেই। আমাদের কী হয়েছিল শুনুন প্লিজ। ইলেভেন-টুয়েলভে পড়ি, ক্যাঁচরম্যাঁচর করে তিননম্বর বাসে চেপে স্কুলে চেপেছি। আমি বসে আছি, সুজাতা আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। বাস হ্যাঁচকা ব্রেক কষল, আমি হাঁ করে দেখলাম সুজাতা মাইকেল জ্যাকসনের মুনওয়াক করার মতো পিছু হেঁটে গিয়ে উল্টোদিকের জেনারেল সিটে বসে থাকা একটা প্রায় আমাদেরই বয়সী, কি বড় জোর কলেজে পড়া ছেলের কোলে বসে পড়ল।
Deleteআর তারপর আমরা দুজনে এমন হেসেছিলাম, যে ছেলেটা নাককান লাল করে পরের স্টপেজেই নেমে গিয়েছিল।
কুম্ভমেলা :(
ReplyDeleteআমি যেখানে সেখানে যখন তখন এত পড়ে যাই যে এক্কেবারে লোকজনের কাছে মুখ দেখানোর যো থাকেনা। অবশ্যই চোটের থেকে লজ্জাটাই বড় হয়। এমনিতেই গর্তে পা পড়ে পা মচকে উল্টে পড়া আর হোঁচট খাওয়ার অভাব ছিলনা, এদেশে এসে আবার আরেকটা জিনিস যোগ হয়েছে - ব্ল্যাক আইস। কথা নেই বার্তা নেই, দিব্যি সোজা রাস্তায় হাঁটছি, হঠাত দেখি পা ছড়িয়ে মাটিতে বসে আছি। জঘন্য!
সিরিয়াসলি সুগত, ব্ল্যাক আইসের থেকে অসভ্য ব্যাপার খুব কমই আছে। হাত পা ছড়িয়ে বসে থাকার ফিলিংটাও আপনি চমৎকার ফুটিয়ে তুলেছেন। থ্যাংক ইউ।
Deleteএকটা আউট-অফ-কন্টেক্সট কথা বলে ফেলি। আপনি নিচের লিঙ্কটায় নাম দিচ্ছেন না কেন?
ReplyDeletehttp://www.indiblogger.in/iba/
ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্লগার নির্বাচন করা হচ্ছে। কত গরুছাগল নাম দিয়েছে, আর আপনি দিলেন না?
ওরে বাবা, সারা ভারত কি সোজা কথা দেবাশিস? যে যুদ্ধে জয় নিশ্চিত নয় সে যুদ্ধ আমি অন প্রিন্সিপল এড়িয়ে চলি। অন্তত যেচে নাম তো ভুলেও দিই না। নিখিল রিষড়া ব্লগিং চ্যাম্পিয়নশিপ হলে সবার আগে লাফিয়ে গিয়ে দিতাম।
Deleteতাছাড়াও আরেকটা কথা আছে। যদি ধরুন বেড়ালের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়ে জিতেও যেতাম, আমি শিওর নই তাতে কী প্রমাণ হত। বা আদৌ কিছু প্রমাণ হত কি না।
কিন্তু সবথেকে বড় কথাটা হচ্ছে আপনি আমাকে এই কম্পিটিশনের যোগ্য মনে করেছেন। সেটাও তো একরকমের জয়, তাই না? আমার এই জয়েই হবে। মায়ের কথা ধার করে বলি, হয়ে বেয়ে পড়বে। অনেক অনেক ধন্যবাদ। মনের একদম ভেতর থেকে।
আরে বস্,শোনো, অনেক ব্লগ দেখেছি,দেখছি,তুমি সেরা ব্লগার খেতাব জিতেই গেছ।
ReplyDeleteমিঠু
আমার কথা জানি না, পাঠকদের কম্পিটিশন হলে যে অবান্তরের পাঠকরা সেটা জিততেন সে নিয়ে আমার কোনও সন্দেহ নেই।
Deleteথ্যাংক ইউ, মিঠু।
hahahaha - darun ekta post. pore jawar probonoto somporke ki r boli. jekhane sekhane ulte pora jano kopale likhiye esechi.:( jak tomar byatha o beshidin thakbena.
ReplyDeleteওঃ তুমিও আমাদের দলের লোক রাখী? গুড গুড।
Delete