শরীরের ভাষা
জে এন ইউ তে গিয়ে যে কত কিছু নতুন শিখেছিলাম, এখনও ভাবতে গেলে মাথা ঘুরে যায়। একুশ বছর ধরে মা যেসব জিনিস বকেঝকে, আদর করে শিখিয়েছিলেন, সেগুলো আনলার্ন করে আবার নতুন করে শিখতে ঘাম ছুটে গিয়েছিল। মা শিখিয়েছিলেন, যখন হাঁটবে তখন খেয়াল রাখবে প্রতিবার পা তোলা আর ফেলার মাঝে যেন চটিটা রাস্তা থেকে পুরোটা উঠে আসে। তুমি চলেছ আর তোমার চটির গোড়ালি রাস্তা ঘষটাতে ঘষটাতে বীভৎস খ্যাস্খ্যাস্ আওয়াজ করে চলেছে, ও রকম হাঁটার থেকে না-হাঁটা ভালো। আরও শিখিয়েছিলেন, দাঁড়ানোর সময় সোজা হয়ে দাঁড়াবে, হাতের কাছে গাছ কিংবা দেওয়াল পেলেই কেষ্টঠাকুরের মতো এলিয়ে পড়বে না। বসার সময়ও নিজের মেরুদণ্ডের ওপর ভরসা করবে, পাশের লোকের গায়ের ওপর গা ঢেলে দেবে না। কথা বলা নিয়েও আমার মায়ের ছুঁৎমার্গ তুঙ্গে ছিল। ‘প্রতিবেশী’র ‘প্র’, ‘কর্তৃপক্ষ’র ‘র্তৃ’ স্পষ্ট শোনা না গেলে কিংবা ‘অনুস্বর’কে ‘উনস্বর’ বলে চালাতে গেলে আমার মা প্রায় মূর্ছিত হয়ে পড়তেন। শুনেটুনে তীর্থদা আমার ছোটবেলাটার ওপর ভীষণ করুণা দেখিয়ে বলল, “তোর মা তো মা কম, মুসোলিনি বেশি মনে হচ্ছে।” আমি “তবেই বোঝো” মুখ করে কাঁচুমাচু হয়ে বসে রইলাম আর তীর্থদা হাত...