নিতাইস্যার আর প্রণববাবু



আমি ক্লাস ইলেভেন টুয়েলভে যার কাছে বাংলা পড়তে যেতাম তাঁর নাম ছিল নিতাইবাবু। স্থানীয় রামকৃষ্ণ আশ্রম স্কুলের রেজিস্টারে অবশ্য তাঁর নামের জায়গায় ত্রিদিবেশ ভট্টাচার্য লেখা ছিল, কিন্তু সহশিক্ষক বা স্কুলের কর্মচারী বা বছরের পর বছর পাস করে বেরনো ছাত্রদের একজনও তাঁকে ওই নাম ধরে ডাকেনি কোনোদিন। রিষড়া স্টেশনে নেমে মিশনের রিটায়ার্ড টিচার নিতাইবাবুর বাড়ি যাব বললেই সবাই দেখিয়ে দিত। “ত্রিদিবেশবাবুর বাড়িটা কোথায় দাদা” জানতে চাইলে হাঁ করে তাকিয়ে থাকত। বা হাত নেড়ে বলত, “ওই নামের কোনো স্যার মিশনে ছিলেন না জম্মে। নাম ঠিক করে জেনে আসুন।”


আমি যখন পড়তে যেতাম তখন নিতাইবাবুর বয়স ষাট পেরিয়েছে। কিন্তু রোগা লম্বা শরীরের মাথায় ব্যাকব্রাশ করা এবং কলপ না ছোঁয়ানো চুলে তখনও সাদার ছোঁয়ামাত্র লাগেনি। স্যারের তিন চাকরি করা ছেলে সবাই পৈতৃক বাড়িতে একসাথে নিজেদের স্ত্রী সন্তান সহযোগে বাস করত। একান্নবর্তী সিস্টেমে। কাজেই স্যারের টিউশন করার দরকার ছিলনা। আমাদের পাশেরবাড়ির বুচিদিদির জেঠু মিশনে নিতাইবাবুর সমসাময়িক অঙ্কের মাস্টারমশাই ছিলেন। আমার মা জেঠুকে ধরে নিতাইবাবুকে রাজি করিয়ে ছিলেন আমার বাংলাটা একটু “দেখে দেওয়ার জন্য”। শনিবার সকালে আর মঙ্গলবার বিকেলে।

ওই দুদিন নির্দিষ্ট সময়ে আমি আমার লাল রঙের হিরো সাইকেল চেপে স্যারের বাড়ি পৌঁছে যেতাম। বড়রাস্তা থেকে ডানদিকে ঢুকে একটা গলি, সেই গলি থেকে বাঁদিকে ঢুকে আরেকটা গলি, সেই গলিটা থেকে বাঁদিকে বেঁকে আরেকটা গলি, সে গলির শেষে ইস্কুলমাস্টারির টাকা জমিয়ে দোতলা বাড়ি তুলেছিলেন নিতাইস্যার। আমাকে সাইকেল চেপে আসতে দেখলে আশেপাশের বাড়ির সদয় প্রতিবেশীদের কেউ না কেউ চেঁচিয়ে খবর দিত, “অ্যাই মুন্নি, দাদুর ছাত্রী এসেছে, দরজা খুলে দে।” মুন্নি ছিল স্যারের বড় ছেলের ঘরের ৭ বছরের নাতনি।

মুন্নি দরজা খুলে দেওয়ার পর আমি ঘরে ঢুকে স্যারের তকতকে ঠাণ্ডা লাল সিমেন্টের মেঝেতে বইপত্র খুলে বসতাম। স্যারের পড়ানোর কায়দা ছিল সহজসরল। যে রচনা/প্রবন্ধ/কবিতাটা স্কুলে পড়ানো হচ্ছে সেটা সংক্রান্ত প্রশ্ন টেস্ট পেপার থেকে খুঁজে খুঁজে উত্তর লেখা। ঘণ্টা দুয়েকে যেক'টা হয়। আমি লাল মেঝেতে বসে শকুন্তলা আর দুষ্মন্তের সম্পর্কের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করতাম, স্যার খাটের ওপর তীরের মতো সোজা হয়ে বসে কোনোদিন খবরের কাগজ পড়তেন, কোনোদিন গীতা, কোনোদিন কিছুই না পড়ে চোখ বুজে বসে থাকতেন। কিন্তু ঘুমোতেন না। কারণ মেরুদণ্ড একই রকমের সোজা হয়ে থাকত।

নিতাইবাবুর সাথে আমার সম্পর্ক বেশ ভালো ছিল। দেশের শিক্ষাব্যবস্থার দুর্দশা নিয়ে মাঝে মাঝে আমাদের আলোচনা হত। স্যার মাথা নেড়ে বলতেন, “তোমরা তো কিছুই শিখছনা”, আমি মাথা নেড়ে তাতে সম্পূর্ণ সমর্থন জানাতাম, স্যার মনে মনে খুব খুশি হতেন। তাছাড়া মুন্নি আর মুন্নির হামাগুড়ি দেওয়া খুড়তুতো বোন, যার নাম আমি ভুলে গেছি, প্রায়ই আমাকে সঙ্গ দিতে আসত। আমার পেনসিলবক্সটাকে গাড়ি বানিয়ে খেলত। মাঝে মাঝে পেনটেন বার করেও ঠোকাঠুকি করত কিন্তু আমার খারাপ লাগত না। আমি পড়তে পড়তেই স্যারের ছোট পুত্রবধূর কোল আলো করে একটি পুত্রসন্তান এসেছিল। নিজের নামের সঙ্গে মিলিয়ে স্যার নাতির নাম রেখেছিলেন অমিতেশ। অমিতেশ ভট্টাচার্যের মুখেভাতে আমি আর আমার মা নেমন্তন্ন খেতে গিয়েছিলাম। মা গিফট হিসেবে থালাবাটি কিছু একটা নিয়ে গিয়েছিলেন নিশ্চয়, তার সঙ্গে আমি একটা হাতে বানানো কার্ডে একটা স্বরচিত কবিতা লিখে নিয়ে গিয়েছিলাম। কবিতাটার বিশেষত্ব ছিল প্রতিটি লাইনের শুরুর অক্ষরগুলো পাশাপাশি সাজালে সেটা “অ-মি-তে-শ-ভ-ট-টা-চা-র-য” হয়ে যাবে। স্যার সবাইকে খুব গর্বিত হেসে কার্ডটা দেখাচ্ছিলেন। “আমার ছাত্রী লিখেছে। কীরকম মাথা খাটিয়েছে দেখেছ?”

মনে আছে একদিন পড়তে পড়তে খবরের কাগজটা হুঃ বলে নামিয়ে রেখেছিলেন স্যার। আমি শকুন্তলা ছেড়ে মুখ তুলে তাকাতে বললেন, “দেশটা ছারখারে গেল বুঝলে কুন্তলা।” আমি বললাম, “সে আর বলতে স্যার।” স্যার বললেন, “একটা দুটো দায়িত্ববান লোক এখনো আছে, এই আমাদের প্রণবের মতো, তাই রক্ষে। নাহলে এতোদিনে আর দেখতে হচ্ছিল না।” আমি জিজ্ঞাসা করলাম, “প্রণব কে স্যার?” স্যার হেসে হাঁটুতে হাত বোলাতে বোলাতে বললেন, “আরে তোমাদের প্রণব মুখার্জি গো, আমার ছোটবেলার স্কুলের বন্ধু।”

“সত্যি স্যার?” আমার অবিশ্বাসী মুখ দেখে স্যার বললেন, “সত্যি গো সত্যি। আমরা এক গ্রামের এক পাঠশালায় পড়তাম, এক প্রাইমারি স্কুলে পাশাপাশি বেঞ্চে বসে ক্লাস করতাম, ক্লাস শেষে ফুটবলও খেলেছি কত। লিডারশিপটা তখন থেকেই প্রণবের মধ্যে ছিল।” নিতাইস্যার স্মৃতিচারণ করতে লাগলেন। ছোটবেলার বন্ধুকে নিয়ে গর্বটা মুখে ফুটে উঠছিল। একই বিন্দু থেকে শুরু করে অনেক উঁচুতে উঠে যাওয়া বন্ধুর প্রতি, ভিড়ের মধ্যে পড়ে থাকা আরেক বন্ধুর ঈর্ষার ভেজালমাত্র ছিল না সে গর্বে।

নিতাইস্যারের সাথে যোগাযোগ রাখা হয়নি। আরও অনেক স্যারের মতো ওনাকেও কথা দিয়ে এসেছিলাম, নিশ্চয় আসব, ফোন করব---করিনি। মাঝখানে একদিন ফোনে শুনলাম, রাস্তায় নাকি স্যারের ছোটবউয়ের সাথে দেখা হয়েছে মায়ের। স্যারের শরীর একেবারে ভেঙে গেছে। সংসারেও অনেক অদলবদল হয়ে গেছে। ভাঙচুর। ছোটবউ মা’কে বলেছেন, “কুন্তলাকে বলবেন না এলে একদিন বাবার সাথে দেখা করতে, পুরোনো ছাত্রছাত্রীরা এলে খুব আনন্দ পাবেন।”

সেটা হবেনা জানি। কীই বা বলব এতদিন বাদে গিয়ে, “আপনাকে দেখতে এলাম”? অকওয়ার্ড লাগবে খুব।

সে যাই আর না যাই, স্যারের কথা খুব মনে পড়ছে আজ। খবরটা নিশ্চয় পেয়েছেন। প্রণবের রাষ্ট্রপতি হয়ে যাওয়ার খবরটা। কী মনে হচ্ছে স্যারের? বীরভূমের গ্রামের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে? প্রণবের ছোটবেলার মুখটা মনে করার চেষ্টা করছেন? মনে পড়ছে নাকি এতদিন বাদে সব ধুয়েমুছে ঝাপসা? অন্য যারা ওঁদের সাথে ফুটবল খেলত তাঁদের কে এখন কোথায় আছে, কার জীবনটা কোন পথে বাঁকলো, জানতে ইচ্ছে করছে? স্যারের নিশ্চয় গর্ব হচ্ছে খুব। গর্বের সাথে সাথে কি কোথাও নিজের জীবনটার দিকে তাকিয়ে অল্প অল্প কষ্টও হচ্ছে? কিছুই কি করে উঠতে পারলাম সেই নিয়ে সংশয় জাগছে?

যেন না জাগে, যেন না জাগে।

Comments

  1. Ki bheeshon bhalo likhechho, Kuntala di. Ki bheeshon bheeshon BHEESHON bhalo. Porte porte amar school jeeboner bibhinno tutor, goromer chhutitey amar gramer baritey giye dupurbela holiday homework kora, madhyamiker aagey sei sara sondhye boshe boshe 'ek kothay prokash' mukhostho kora...sob hurmuriye mone pore golar kachh ta byatha byatha korchhe kirom. Dhur.

    p.s. Chhotobelay amader barir purono lojjhore garita chalato je Joy mama(ekhon ar chalay na), sey khub Congress supporter chhilo. Ekhono achhe. Sey jekhane thakto, tar pashei ekta unchu flat baritey thakten Pranab Mukherjeer bon. Toh sei Joy mamar dui chhele-meye kei ei bon khub bhalobashten, tara onar kachhe private tuition korte jeto, ar roj Joy mama eshe bolten, 'chheleta bodh hoy amar utre jabe. pranab mukherjeer boner kachhe porchhe bole kotha...' Onekdin Joy mamar sathe jogajog nei. Ekhon na jani sey kirom lafalafi korchhe. :-D

    ReplyDelete
    Replies
    1. ভালো লেগেছে বিম্ববতী? যাক।

      আমার এক কথায় প্রকাশ ব্যাপারটা খুব প্রিয় ছিল জানো। অনেকগুলো এখনও মনে আছে। তোমার জয়মামার এইমুহূর্তের আনন্দের কথা কল্পনা করে আমারই মনটা ভালো হয়ে যাচ্ছে। ভাবো, একেবারে রাষ্ট্রপতি!

      Delete
  2. Amar ek kothay prokash kichhutei mone thakto na. Predictably, shudhu duto word ekebarei bhultam na.

    1. Ritutey ritutey je jogyo kore (Ritwik): Karon tokhon Hrithik Roshan ke boro porday dekhe buk dorfor sobey shuru hoyechhe

    2. Arike domon kore je (Arindam): Karon ei naamer ekta chheler teebro premey porechhilam tokhon. :-P

    Ekta pattern dekhte pachcho ki? :D

    ReplyDelete
    Replies
    1. Ei jah. Reply korte giye notun comment hoye galo!

      Delete
    2. পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি বিম্ববতী। আর এটাও বুঝতে পারছি, তোমার কলকব্জা হরমোন টরমোন গুলো সব যে যার কাজ মন দিয়ে করছিল, ফাঁকি মারছিল না।

      Delete
  3. শীর্ষেন্দু হয়ে যাচ্ছিস্‌ কুন্তলা।

    ReplyDelete
    Replies
    1. আমি তোমার কথাটা ফেসভ্যালুতে নিচ্ছি এবং খুশি হচ্ছি। থ্যাঙ্ক ইউ।

      Delete
    2. এই মন্তব্যটা লেখার সঙ্গে জুড়ে দিতে হবে... যেমন:

      নিতাইস্যার আর প্রণববাবু

      কুন্তলা-> "আমি ক্লাস ইলেভেন............যেন না জাগে।"

      অভিষেক-> "শীর্ষেন্দু হয়ে যাচ্ছিস্‌ কুন্তলা।"

      কুন্তলা-> "আমি তোমার কথাটা ফেসভ্যালুতে নিচ্ছি এবং খুশি হচ্ছি। থ্যাঙ্ক ইউ।"

      :P :D

      Delete
  4. shokto kothata shohoj kore bolte para-ta ekta bishaaaaaaaaaal talent. kuntala, tomar nijero shikkhika howa uchit.
    ei shob dekhe shune mone hochhey amar aar nijer blog-er pichhone shomoy noshto kora uchit na :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. জঘন্য। বাড়াবাড়ির একটা সীমা থাকা উচিত।

      Delete
    2. কুন্তলার এই পোস্টটা আমাকেও সিরিয়স ইনফিরিয়রিটি কমপ্লেক্স দিয়েছে। :(

      Delete
    3. ষাট ষাট।

      ইয়ার্কি বাদ দিয়ে...তোমরা এসব বোলোনা। ভয়ানক অস্বস্তিকর। সিরিয়াসলি।

      Delete
    4. আনন্দবাজারের উচিত এই লেখার বদলে এই লেখাটা:http://www.anandabazar.com/archive/1120723/23cal1.html

      ছেপেছে বলে ক্ষমা চাওয়া... :)

      Delete
    5. সুনন্দ, তোমরা আজকালকার ছেলেপুলেরা আশীর্বাদ টাশীর্বাদে বিশ্বাস করনা তাও বলছি, "বেঁচে থাকো বাবা বেঁচে থাকো।"

      Delete
    6. আমিও একমত| আমি তো ফ্রাস্টু খেয়ে ব্লগ লেখাই ছেড়ে দিয়েছি প্রায়!

      Delete
    7. হ্যাঁ হ্যাঁ সেই তো।

      Delete
  5. bhishon bhishon bhalo Kuntala di! odbhut sundor lekhar badhuni.amar XI-XII er bangla sir er kotha ei proshonge bola-ta khub e oprasongik hobe. tobe jodi kono din lyad katate pari, tobe lekhar ichche roilo. r se ichche ta tomar lekha ta porte portei jaglo.
    bhishon tan tan lekha tomar.porte porte dekhte pawa jay. r onek smriti moner frame-a bhir kore phele nimeshe....ghire thake.adda cholte thake tader sathe,onekdin pore hothat kore barite chole asa purono bondhur sathe golpo korte bosar moto.koto kichhu mone ase-kintu khub ogochhalo bhabe,thik sajano gochhano na.othocho khub bhalolagay bhore jay mon ta.
    r ekhanei tomar lekhar obhinobotwo.ontoto amar kachhe tai lagche.
    thank you.

    ReplyDelete
    Replies
    1. আরে তুমি আমাকে থ্যাঙ্ক ইউ বলছ কি হিয়া, ধন্যবাদ তো আমার তোমাকে দেওয়ার কথা।

      Delete
  6. khub bhalo!.... oi duto khope kothay gelo??!

    ReplyDelete
    Replies
    1. হ্যাঁ, feedback দেওয়া যাচ্ছে না... মনে হয় এবার 'ভীষণ ভীষণ ভালো' বলে কিছু একটা আসতে চলেছে... :P

      Delete
    2. থ্যাঙ্ক ইউ তিন্নি।

      আরে আমার ওই খোপদুটো কীরকম ছেলেমানুষি লাগছিল বলে সরিয়ে দিয়েছি। তোমরা যে এত ভালো ভালো কথা বলছ তাতেই তো যথেষ্ট।

      Delete
  7. আচ্ছা, ঐ কবিতাটা পাওয়া যাবে? আর কিছু না, আমি ট আর টা দিয়ে শুরু লাইনদুটো দেখতে খুব উৎসুক।

    ReplyDelete
    Replies
    1. লিখতে গিয়ে আমি নিজেও নিজের কবিত্বপ্রতিভার কথা মনে করে চমকে যাচ্ছিলাম। আন্দাজ করার চেষ্টা করছিলাম অক্ষরগুলো দিয়ে মানানসই কী কী লাইন লেখা সম্ভব। বিশেষ করে ওই ট আর টা দিয়ে। মনে পড়লনা। কিন্তু আমি বই ছুঁয়ে বলছি সত্যি সত্যি কবিতাটা লিখেছিলাম। একটুও বানিয়ে বলছিনা।

      Delete
  8. Lekha-ta bhalo laaglo.

    Prosongotoh, Pranab-babu'r aarek sohopaathi Bibhudan Mitra aamar baba'r sohokormi ebong ghonishtho bondhu. Nitai-sir nishchoi tnaakeo chinben.

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ ধন্যবাদ। নিতাইস্যার আপনার বাবার বন্ধুকে চিনবেন নিশ্চয় কিন্তু সেটা মিলিয়ে নেওয়ার সুযোগ হবে না বোধহয়।

      Delete
  9. oi tick chinho marar bakso nei tai likhei bolchi, eta o-sa-dha-ro-nnnn likhecho

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাঙ্ক ইউ স্বাগতা।

      Delete
  10. phataphati, ghyama, chabuk, byapok...jio!

    ReplyDelete
  11. Bah byapok post! Sotyi ei jhanu politician gulo-o je ekdin chhoto chhilo, school e bondhu der sange football khelto, seta mone kortei pari na. Tobe 2to katha, 1. Nitai-sir er life Pranab babu'r theke dher bhalo. Uni je chhele-pule-naati-naatni niye beshi boyesh porjonto eksange chhilen, ar ei je onake niye post lekha hoche, tar thekei seta bojha jaye. Pranab babu ke kichu lok gali debe ar kichu lok dorkare pore tel debe. 2toi joghonyo. Ota ekta life holo?
    2. Tumi parle ekbar Nitai-sir er sange dekha kore esho next baar India gele. "Sir, apnake dekhte elam" bolei jeo. Awkward lagbe na, bhaloi lagbe. Kintu uni jokhon ar thakben na, tokhon hajar cheshta koreo ar dekha korte parbe na, ar mone hobe keno sedin ektu moner jor kore gelam na.

    ReplyDelete
    Replies
    1. আমি এটার সঙ্গেও একমত| আমাদের ক্লাস ফাইভ এর ক্লাস টিচার ছিলেন মিসেস আনন্দ| উনি তখনি বৃদ্ধা, আমায় বেশ ভালবাসতেন| ক্লাস সিক্স, সেভেনএ পড়বার সময়েও মাঝে মধ্যে দেখা করতে গেছি ওনার সঙ্গে, তারপর কবে যেন বন্ধ হয়ে গেল| ক্লাস টেন পাস করবার পর, যখন আই সি এস ই রেজাল্ট বেরিয়েছে আর সেই আনন্দে মেতে আছি, হঠাত একদিন মিসেস আনন্দকে স্বপ্ন দেখলাম| আমার সাধারণত স্বপ্ন মনে থাকেনা কিন্তু এটা খুব স্পষ্ট দেখলাম, উনি ওই রেজাল্ট নিয়েই আমায় কিছু একটা বলছিলেন| পরদিন স্কুলে গিয়েই ছুটলাম ক্লাস ফাইভে ওনার সঙ্গে দেখা করতে| কিন্তু উনি রিটায়ার করে গেছেন, অনেকদিন আর আসেননা, ওনার খবরও কেউ দিতে পারলনা| খুব খারাপ লেগেছিল|
      তাই আপনার দেশে গেলে স্যারের সঙ্গে অবশ্যই দেখা করে আসা উচিত|

      Delete
    2. রিয়া আর সুগৎ, ঠিকই। দেখি এবার জোর করেই যাব। আর আমি নিশ্চিত আমার গেলে ভালো লাগবে। তবুও যে কেন যাইনা রহস্য।

      রিয়া, তোমার মন্তব্যের প্রথম পয়েন্টটার সঙ্গেও একমত। ঠিকই বলেছ। সাংসারিক ছোটখাটো অশান্তি হয়ত সবারই থাকে কিন্তু প্রণববাবুর তো স্রেফ ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো। জানি সেটা কাউকে না কাউকে তাড়াতেই হয় নাহলে বন ছারেখারে যায়, কিন্তু ওটা করতে পারছি না বলে হাহুতাশ করারও কিছু নেই। ঠিকই বলেছ।

      Delete
    3. সরি সরি *সুগত*...হাহাহাহা। সরি।

      Delete
  12. Aaj sakale tv-te pronob-babur ak chhotobelar bondhur interview holo. khub mon diye dekhini tai sure noy, tabe namta Nitai hoteo pare. Uni chhotobelay eksange khela korechen. Uni khub bhalo ekta kathha bollen. Bollen amar Rabindranathher ekta gun mone asche. "Amar khela jakhon chhilo tomar sane takhon ke tumi ta ke janto..."

    ReplyDelete
    Replies
    1. একেবারে জায়গামত গান। তবে আমাদের নিতাইবাবু টিভিতে ইন্টারভিউ দিতে যাবেন কিনা আমার একটু সন্দেহ আছে। রেডিও ছাড়া আর সবকিছুই ওনার কাছে অপসংস্কৃতি ছিল জানতাম। তবে যেতেও পারেন পুরনো বন্ধুত্বের টানে, জানিনা।

      Delete
  13. Ekta mon chhnuye jawa lekha porlam sokaale ghum theke uthe....tobe nijer jiboner dike taakiye koshto hoyto hobe na Nitaibabur jodi jaante paaren aajo tnaar kono kono chhatro-chhatri tnaake mone rekhechhen, byasto jiboner oboshoreo tnaar jiboner smritichaaron koren bondhuder shonge...Tnaar chhatro-chhatrira aaj matha unchu kore jibone protishtho, ebong eki shonge mone rekhechhe tnaake aajo...ekjon mastermoshaier jiboner sreshtho shapholyo etai, jemon ekjon rajneetibider jiboner sreshtho shaapholyo desher shobcheye shommaniyo pod oshigrohon....Aaj 50 bochhor pore chhelebelaar dui bondhui kintu eki bindute dnariye ...keu ektuo egiye nei, pichhiye nei.......................

    Shobsheshe lekhataar jonyo abaaro hajaar obhinondon..

    ReplyDelete
    Replies
    1. এটা মনের মধ্যে জপ করব শ্রমণ আজ থেকে..."কেউ একটুও এগিয়ে নেই, পিছিয়ে নেই..."

      তোমার লেখাটা ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। থ্যাঙ্ক ইউ।

      Delete
  14. Kuldip Nayyar er notun boi "Beyond the Lines" e uni pranab babu'r sambandhe likhchen

    "I recall his phone call to the Statesman when I was resident editor, requesting me to have tea at his house. He held no government office then. We three, including his wife, sat on the floor and sipped tea.... They had very little furniture and no servant. His wife was a struggling dancer seeking to gain recognition. When he requested me to give her publicity, I realised why he had invited me. I met the same Mukherjee some years later during Emergency. His house exuded opulence...the sitting room was cluttered with stylish furniture, plush carpets and sparkling silver. He was then commerce minister."

    ekhon tow bari aaro plush hobe :))
    tobe uni kalam er moton open rashtrapati bhavan rakhben bolechen, jate kore common lok jon anek ta area ghure berate pare. tai ebar dilli gele ponob da'r bari dekhe ashar ichhe roilo

    ReplyDelete
    Replies
    1. আরে কোথায় একটা লিখেছে দেখলাম শম্পা, রাষ্ট্রপতি ভবনে নাকি ৩৪০ টা ঘর। কী করবেন প্রণবদা অতগুলো ঘর নিয়ে! আমরা মাঝে মাঝে গিয়ে থাকলে তবু একটু কাজে লাগবে।

      Delete
  15. আপনি হয়ত নিতাই স্যারের কথা লিখছিলেন, কিন্তু "লম্বা শরীরের মাথায় ব্যাকব্রাশ করা এবং কলপ না ছোঁয়ানো চুলে - " অবধি পড়বার পরেই উনি আর নিতাই স্যার না থেকে আমার দাদু হয়ে গিয়েছিলেন মনের মধ্যে| বাকি লেখাটায় আমি মনে মনে দাদুকেই কল্পনা করেছি, দাদুর মুখেই স্যারের কথাগুলো বসিয়ে নিয়েছি|
    খুব খুব খুব ভাল লাগলো পড়তে| আমি আবার বলছি, আপনার লেখার প্রতিভাকে কোনরকম ছোট করতে চাইনা, আপনি সবই ভাল লেখেন, কিন্তু আমি হুগলির ছেলে বলে কিনা জানিনা, আপনার ছোটবেলার গল্পগুলো যেরকম মন ছুঁয়ে যায় সেরকমটা কিন্তু অন্য লেখায় হয়না| আপনি যাই লিখুন না কেন, মাঝে মাঝে এরকম একেকটা গল্প উপহার দিতে ভুলবেননা|

    ReplyDelete
    Replies
    1. তিনিও তো শতশত ছাত্রের স্যার ছিলেন সুগত, তাই মিল না থাকলেই অস্বাভাবিক। মাস্টারমশাই বা দিদিমণিদের, সে তাঁরা রোগা মোটা বেঁটে কালো ফর্সা যেমনই হোক না কেন, সবাইকেই "মাস্টারমশাই/দিদিমণি"-এর মতো দেখতে হয়, এ আমি মিলিয়ে দেখেছি। না দেখতে হলেই বরং তাঁর মাস্টারমশাই-ত্ব নিয়ে সন্দেহ হয় আমার মনে।

      ধন্যবাদ ধন্যবাদ সুগত। মনে রাখব।

      Delete
  16. ekhane aamio sugato'r sange ekmot. aamaro K'r chotobelar goppo aar barir....maa, thakuma, pishi, mashi, parar lok er goppo gulo porte sab cheye bhalo lage :))

    ReplyDelete
    Replies
    1. তাই? আচ্ছা মনে রাখব।

      Delete
  17. bah darun likhechho kuntala di :). tomar moto amaf o jano purono anek sir der sathe dekha kora hoyna, athochho pora sesh howar somoy koto bhebe r bole ashi - asbo, phone korbo, etc. icheo kore, kintu oi!! tomar shakuntala r dushmanter prem er byakha shune amar bangla sirer kache porar kotha mone pore gelo. sei je go, taatporjo likhtam na? "bujhilaam sneho oti bishom bostu!" :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ ধন্যবাদ আত্রেয়ী। সেটাই তো স্যারেদের দেওয়া কথা রাখিনি কোনোদিন। হাহা, স্নেহ কিন্তু সত্যি বিষম। তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

      Delete
  18. Khub Sundor! Khub sohoj kore likhechho. Bhalo laglo!

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাঙ্ক ইউ বজ্র। ভালো লেগেছে জেনে আমারও খুব ভালো লাগল।

      Delete
  19. আরে আমিও তো প্রণববাবুর গাঁয়ের লোক। নিতাই বাবুর আদি বাড়ি কি কীর্ণাহারে? নেট এর দুনিয়ায় এসে কিরকম চেনাশোনা বেরিয়ে যাচ্ছে, অ্যাঁ?

    ReplyDelete
    Replies
    1. সেই তো দেখছি আবির। তুমিও আমাদের রাষ্ট্রপতির প্রতিবেশী? সাঙ্ঘাতিক ব্যাপার তো।

      Delete
    2. হ্যাঁ। দাদু প্রত্যেক বছর নিয়ম করে সাড়ে তিনদিন কাটিয়ে যান কীর্ণাহারে পূজোর সময় এসে। এবার বোধহয় প্রোটোকল বাদ সাধতে চলেছে। দেখা যাক প্রোটোকলের না মা দুগ্‌গার, কার টান বড়। :D

      Delete
    3. হুমম, আবার একগাদা সিকিউরিটির ব্যাপারও থাকবে তো এলে।

      Delete
    4. এই দেখো আজকের কাগজে কি বলছে।
      http://www.anandabazar.com/21desh3.html

      Delete
    5. দেখলাম। মিরিটিতে রাষ্ট্রপতি পুজোর কদিন থাকবার প্ল্যান ভাঁজছেন।

      Delete

Post a Comment