ভূতের থেকেও ভয়ঙ্কর
অফিস যাওয়ার অনেক ভালো দিকও আছে, অনেক খারাপ দিকও আছে। ভালো
দিকের মধ্যে মাসের শেষে মাইনে, ফ্রি চেয়ারটেবিল, ফ্রি ইন্টারনেট আর টুইনিংস-এর
লেমন টি ফ্রি ছাড়াও যেটা আছে সেটা হচ্ছে বাড়ি ফিরে এসে গায়ে জল ঢেলে, যথাসম্ভব কম
এবং ছেঁড়াখোঁড়া জামাকাপড় পরে বিছানার ওপর গা ছেড়ে দেওয়ার মুহূর্তটা। উইকএন্ডে বা
অফিস কামাই করে ছেঁড়া জামা পরে সারাদিন খাটের ওপর গড়ালেও ওই মুহূর্তটা রেপ্লিকেট
করা যায়না। আমি পরীক্ষা করে দেখেছি। স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটি থেকে ফিরে আসার পরেও
ওরকমটি হয়না। আমি কোটি কোটি বছর ধরে ফিরে এসে এসে দেখেছি। স্কুলে সারাদিন চড়া
রোদ্দুরে দৌড়োদৌড়ি করে লক-অ্যান্ড-কি খেলে, কলেজে সারা কলকাতা টইটই করে ঘুরে,
ইউনিভার্সিটিতে সারাদিন ধাবায় বসে আড্ডা মেরে ঘরে ফিরেও অত ক্লান্ত লাগে না যত
ক্লান্ত এয়ারকন্ডিশন্ড অফিসে ঘুরন্ত চেয়ারে পায়ের ওপর পা তুলে বসে কাজে ফাঁকি মেরে
লাগে।
অফিস থেকে ফিরে যদি হোমওয়ার্ক করতে হত, কিংবা কোচিং ক্লাসে
ছুটতে হত, অথবা যদি স্বাতীকে ফোন করে গুজগুজিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গল্পও করতে হত
তাহলেও আমি কেঁদে ফেলতাম বিশ্বাস করুন।
অফিস থেকে ফিরে শুধু শুয়ে শুয়ে ইন্টারনেট দেখা ছাড়া আর যে
কোনো কাজ করা মানেই প্রাণান্ত। অদ্ভুত কিন্তু সত্যি।
যাই হোক কাল বাড়ি ফিরে আসার পর সেই বহুপ্রতীক্ষিত মুহূর্তটা
এল। চুল ভিজিয়ে স্নান করে ল্যাপটপ কোলে নিয়ে বিছানায় পিঠ ঢেলে দিয়ে আরাম করে গলা
ছেড়ে “আআআআআহ” বলার মুহূর্তটা। কিন্তু “আআআআহ” বলার পরেই কীরকম একটা অস্বস্তি হল।
নিজের কানেই নিজের গলাটা ঠিক শোনালো না। ঘাবড়ে গিয়ে আমি আরও একবার বেশ জোরে লম্বা “আআআআআহহহহহ”
বললাম। এবং স্পষ্ট শুনলাম “আআআহহহ”-এর সঙ্গে সঙ্গে একটা ক্যাঁচকোঁচ আওয়াজ হচ্ছে।
গলার ভেতর জং ধরল নাকি?
ভুরু কুঁচকে ভাবতে ভাবতে শুনি আবার ক্যাঁচকোঁচ। যাক গলার
ভেতর কিছু হয়নি তার মানে। মুখ বুজে থাকলেও গলা নিজে থেকেই আওয়াজ করবে অত কঠিন অসুখ
নির্ঘাত হয়নি আমার। তার মানে বাইরে থেকে আসছে আওয়াজটা।
ক্যাঁচকোঁচ। আগের থেকে অনেক জোরে। আগের থেকে অনেক কাছে।
আমি বুকের ওপর থেকে ল্যাপটপ ছুঁড়ে ফেলে লাফ মেরে খাটের ওপর
উঠে বসলাম। আওয়াজটা বাড়ছে, তার মানে আওয়াজের উৎস স্থান পরিবর্তন করছে। তার মানে হয় আমার ঘরে হয় চোর ঢুকেছে, নয়তো ভূত।
তিন নম্বর সম্ভাবনাটা মনে পড়ায় খাটে বসে বসেই আমার হাত পা
পেটের মধ্যে সেঁধিয়ে গেল। ইঁদুর। ছোট্ট, বাদামি, রোমশ আর ইয়াব্বড় ল্যাজ। আমার
রান্নাঘরে এটা ওটা শুঁকে বেড়াচ্ছে, ক্লোসেটে ঢুকে জামা কাপড় সোয়েটার সুটকেস
ছিঁড়েকুটে একশেষ করছে। মাঝরাতে ঘুম ভেঙে আমি যখন অন্ধকারে হাতড়ে হাতড়ে রান্নাঘর
থেকে সল্টাইন আনতে যাব তখন আমার পায়ের তলা থেকে সড়াৎ করে ছিটকে যাবে। নরম মতো কী
যেন একটা।
বাবাগো। অনেকদিন পর আমার মায়ের বদলে বাবার কথা মনে পড়ে
কান্না পায়। তুমি এসে ইঁদুরটাকে মেরে দাও না গো বাবা।
কিন্তু বাবার আসতে বয়েই গেছে। সাঁতার শিখিয়ে, সাইকেল চড়িয়ে,
কী করে একবারে ২৭টা ফুচকা খেতে হয় দেখিয়ে দিয়ে বাবা আমাকে বিশাল বিরাট পৃথিবীতে
ছেড়ে দিয়েছেন। এইবার তোমার নিজের সংগ্রাম নিজের। লড়ে খাও সোনা।
অন্য সব সমস্যার ক্ষেত্রেও যেটা মাথায় আসে, প্রথমে আমার সেই
সমাধানটার কথাই মাথায় এল। চোখ বুজে থাকলে কেমন হয়? থাক ইঁদুর নিজের মতো। যতক্ষণ না
রান্নাঘরের সব খাবারের প্যাকেট ফুটিফাটা হচ্ছে, যতক্ষণ না ক্লোসেটের সব জামাকাপড় কুটিকুটি
হচ্ছে ততক্ষণ মাথা ঘামানোর দরকার নেই। তারপর যো হোগা দেখা যায়েগা। বলা যায় না
ততদিনে বোরড হয়ে গিয়ে ইঁদুরটা নিজে নিজেই পাশের বাড়িতে চলে যেতে পারে তো?
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে আমি খাট থেকে নেমে সবার আগে পায়ে চটি
গলালাম। যাই হোক না কেন ইঁদুরের সঙ্গে বডি কন্ট্যাক্ট ঘটতে দেওয়া চলবে না। তারপর
টেবিল থেকে একখানা লম্বা স্কেল হাতে নিয়ে ইঁদুরের সন্ধানে বেরোনো গেল।
স্কেল কেন? কারণ যাতে ইঁদুরের থেকে আমার হাতের সওয়া
দুই ফুট প্লাস স্কেলের এক ফুট, সাড়ে তিন ফুট দূরত্ব অন্তত রক্ষা করা যায়। ক্যাবিনেট খুলে খুলে হাত
যথাসম্ভব লম্বা করে করে আমি স্কেল দিয়ে জিনিসপত্র বেপরোয়া খোঁচাতে লাগলাম, ধুমধাম
করে এ কৌটো ও কৌটোর ওপর গড়িয়ে পড়তে লাগল। আমার এত সাধের অ্যালফাবেটিক্যালি সাজানো
স্পাইস শেলফের দফারফা হয়ে গেল। কিন্তু ইঁদুরের ল্যাজের টিকিটি দেখা গেল না।
গোটা বাড়ি স্কেল দিয়ে হাঁটকে আমি মিশ্র অনুভূতি নিয়ে খাটে ফেরত এলাম। ইঁদুরের
সঙ্গে যে দেখা হয়ে যায়নি সেটাতে স্বস্তিও লাগছিল আবার বুকের ভেতরটা খচখচও করছিল।
আওয়াজটা ভুল শুনিনি নিশ্চিত, তাহলে ব্যাটা লুকলো কোথায়? কাল বিকেলে বান্টির হাতে
পায়ে তেলমালিশ করে আরেকবার সারা বাড়ি খোঁজাতে হবে মনে হচ্ছে। ভাবতে ভাবতে যেই না
শোওয়া অমনি আবার, ক্যাঁচকোঁচ।
কীরকম রাগটা ধরে আন্দাজ করতে পারছেন নিশ্চয়? রাগের সঙ্গে
সঙ্গে দুঃখ, মনখারাপ, হতাশা সব মিলিয়ে একটা জঘন্য ব্যাপার ঘটে। আমার যে ইঁদুর মেরে দেওয়ার
কেউ নেই, আমাকে যে দিনের শেষে হা-ক্লান্ত শরীরে একলা বাড়িতে স্কেল হাতে ঘুরে ঘুরে
ইঁদুর খুঁজে বেড়াতে হচ্ছে সেসব মনে করে কীরকম কান্না কান্না পেয়ে যায়। কাঁদব কিনা
মনস্থির করতে না পেরে আমি শূন্য দৃষ্টি মেলে সিলিঙের দিকে চেয়ে শুয়ে রইলাম।
আর তক্ষুনি চোখে পড়ল।
সিলিঙের ঠিক মাঝখানে একটা সবুজ ছোপ। চোখ সরু করে তাকাতে টের
পেলাম ছোপটা নড়ছেচড়ছে। খাটের ওপর উঠে দাঁড়িয়ে ছোপটার কাছাকাছি পৌঁছতেই দেখি ফড়িঙের
মতো দেখতে একটা প্রাণী। প্রথমটা গঙ্গাফড়িং মনে করে বুকটা নেচে উঠেছিল। কতদিন পর!
আছে নাকি এখানে গঙ্গাফড়িং! আগে দেখিনি তো! কিন্তু একটু পরে টের পেলাম গঙ্গাফড়িং-এর
মতো লম্বাটে নয় জিনিসটা। একটু বেঁটেমোটা গোছের। শরীর থেকে অবশ্য ফড়িঙের মতোই কাঠি
কাঠি হাত পা বেরিয়েছে চারখানা। মাঝে মাঝে জিনিসটা সামনের দুটো কাঠিকে একে অপরের সঙ্গে
ঘষছে আর আওয়াজ হচ্ছে, ক্যাঁচকোঁচ।
পরমানন্দে আমি দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থা থেকেই ধপাস করে শুয়ে
পড়লাম। নরম ম্যাট্রেসে পড়ে শরীরটা অল্প লাফিয়ে উঠল। গলা থেকে আরামের একটা গোঙানি
বেরিয়ে এল। এত ভালোলাগল যে কী বলব, সারাদিন পর অফিস থেকে ফিরে এসে বিছানায় প্রথম গা ঠেকালেও অত ভালোলাগেনা কখনো।
Tumi kintu khub-i sahosi, Kuntala di. Ami holey oi chhnera jama porei bari theke beriye jetam. Scale haatey khnojar sahostao bishesh nei. :/
ReplyDeleteআরে সাহসী কি সাধে বিম্ববতী? সাহসী না হলে ওই ইঁদুর কোলে করে ঘরের মধ্যে বসে থাকতে হত, আর তারপর যখন রাতে ইঁদুর এসে আমার গায়ের ওপর দিয়ে দৌড়ে যেত তখন সোজা হার্টফেল।
Deleteতোমার ছেঁড়া জামা পরেই বাইরে চলে যাওয়ার কথাটা পড়ে একা একাই জোরে জোরে হাসছি।
:)))) ki chilo ota?
ReplyDeleteকে জানে, রুচিরা তো বলল চিকাডা হতে পারে।
DeleteJakhon eka chhilam-er katha mone pore gelo! Khub bhalo likhechho. Ah sei baree phire bichhana...! Ajkal baree phirei Tuktuk-er dinner nie tar pechhone chhota, eta beshee majar ota beshee aramer! sobuj byapar ta hoito cicada chhilo. google image-e ekbar check kore nio.
ReplyDeleteযা বলেছ, এটা আরাম ওটা মজা। তবে তোমার কথাই বিশ্বাস করে নিচ্ছি, গুগল করে আর পোকার ছবি খুঁজতে যাচ্ছিনা। এই করতে গিয়ে আগে যা সব জিনিস দেখেছি, সেসব দৃশ্যের স্মৃতি চোখ থেকে ঘষে তুলতে আমার জান বেরিয়ে গেছে। ও রাস্তায় আমি আর নেই।
DeleteJano kuntaladi ami o aaj ekta bes boro size er foring dekhlam.... amar ek frnd tar pic tullo ki je pagla dekhte pry 1hr dhore se amader photok tolar jonno pose dea gelo r amar sei bondhutio jomiye foring konner(nigghat meye coz na hole kue oto photo conscious hoy) photo tolar sadh metalo.... issssss jodi pic ta dekhate partam.....
Deleteবাঃ গঙ্গাফড়িঙের ফোটোশুট? দারুণ ব্যাপার তো। তোমার বন্ধুটি বুঝি DSLRধারী ফোটোগ্র্যাফার? নাহলে একঘণ্টা ধরে ফড়িঙের ফোটো তোলার ধৈর্য থাকাটা একটু কঠিন।
Deleteহুম ঠিক ধরেছ :))
DeleteKoto bar bolechi bari te ekta hulo beral posho. Tahole ki ei sob jhamela hoy? Hulo ra idur, arshula, makorsha, phoring-toring sob mere fele. At least bhoy dekhiye tariye daye if not any more! Shunbe na katha to scale niye idur dhorte/petate jete hobe!
ReplyDelete(Tumi scale diye idur petachho bhebe khub hashi pelo!!!)
Office theke eshe chan kore dhop kore pora ekhon bhabteo pari na. Agey 3te brown lomer ke khete ditey hoy (ekjon er khabare baat er oshudh meshate hoy), tarpor tader uchhishto thala-bati dhute hoy, tarpor tader bathroom porishkar korte hoy. Tarpor nijera khai, shey sob holey pore ga haat pa dhuye khate boshe barite phone korte pari...:D Theka ki kom?
পেটাচ্ছি কি গো রিয়া, বল আত্মরক্ষা করছি। তোমার তিন মার্জার সন্তানের লালনপালন শুনে আমি ইমপ্রেসড। আমি সিরিয়াসলি বলছি নিজেরই এত খেয়াল রাখতে পারিনা।
Deleteeta thik bolecho....ga dhuye, rong ota norom hoye jawa shutir jama pore dhop kore bichanay pora ta ekta daroon byapar!
ReplyDeletejust ek cup gorom chaa aar background e ektu gaan thakle tow kya baat!
tobe aarektu bhalo hoy jakhon baire brishti, ghor e lamp jolchey, aar chaa chanachur er sange mian ki malhar :))
আর সেটা যদি ওস্তাদ আমির খানের গলায় হয়, তাহলে তো আর কথাই নেই, বল?
Deleteeta khub moner kotha bolle, Shampa r kuntala di dujonei. :)
Deleteমিল মিল, হিয়া।
Delete১ এই পোস্টে ঐ প্রাণীর ছবি চাই।
ReplyDelete২ বর্ণাক্রমানুযায়ী সাজানো মশলা। তুই বেশ গোছানো কিন্তু।
৩ তিনফিটের দূরত্ব ব্যাপারটা বুঝলাম না। স্কেল এক ফুট, হাত দু'ফিট - কিন্তু হাতে ইঁদুর লাগলে তোর সমস্যা নেই?
আরে হাতে লাগাবনা বলেই তো স্কেল। ইঁদুর আর আমার হাতের মাঝখানে স্কেল থাকবে, বুঝেছ?
DeleteNaaaaaa oi [ranir chhobi chai naaaaaaa
Deleteঘাবড়িও না রিয়া, দিচ্ছি না।
Deleteঅত ইঞ্জিরি জানিনা মশাই, আপনার ঘরে ঝিঁঝিপোকা ঢুকেছে| একবার এক বছর পর ঝিঁঝিপোকার ডাক শুনে আমিও অত্যন্ত আহ্লাদিত হয়েছিলাম, কিন্তু ওরাও জামাকাপড় কাটে, আর গায়ে চেটে ঘা করে দেয়| কানে ঢুকলে তো কথাই নেই| সাবধানে থাকবেন| তাও ভাল, সিলিং থেকে ঝুলে কিঁচ কিঁচ করছে শুনে আমি প্রথমে চামচিকে ভেবেছিলাম| সেটা নয় ভাগ্যিস| সেটা হলে ইঁদুরের মতই হত, শুধু ধরুন উড়ন্ত ইঁদুর|
ReplyDeleteকী ভয়ানক। উড়ন্ত ইঁদুর! ভাবা যায়? আপনার কমেন্ট পড়ার পাঁচ সেকেন্ডের মধ্যে তিনজনের নাম মনে পড়ে গেল যাদের ঘরে উড়ন্ত ইঁদুর ঢুকিয়ে দিতে পারলে আমি যারপরনাই খুশি হতাম।
Deleteকানে পোকা ঢুকে যাওয়াটা আমার একটা আশৈশব ভয় জানেন তো।
uff sugata da je tomay double bhoy dekhabe, etai expected chhilo x-(
DeleteEi amay ekta uronto idur pathabe? Amaro onek lokjoner naam mone pore gelo jader ghore (raate jokhon tara ghumobe) uronto idur chharbo ami. Sei uro-uri te tader ghum bhangbe tarpor tader ja hobe.....uff bhebei ami anande lafiye uthchi :)
Deleteসিরিয়াসলি আত্রেয়ী।
Deleteরিয়া, আমি যদি পাই তোমাকে পাঠাব। প্রমিস।
এটা আমাদের বাড়ির উড়ন্ত ইঁদুর| আপনারা চাইলে আমার বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন|
Deleteসর্বনাশ করেছে।
DeleteCLIMAX TA JUST FATAFATI..............
ReplyDeleteধন্যবাদ ধন্যবাদ কুহেলি।
Deleteসত্যি আপিস থেকে ফিরে ক্যাঁচকোঁচ মানে সারাদিনটাই নষ্ট। তার ওপর যদি আবার ইঁদুরের মত অতিমানবিক একটা জন্তু হয় তাহলে তো আরোই কিছু বলার থাকে না। কখন কোথায় দিয়ে ঢুকে আবার কোথায় দিয়ে সুরুৎ করে বেরিয়ে যাবে কে জানে বাবা! আমি যে ইঁদুরের গল্প শেয়ার করতে যাচ্ছি তিনি অবশ্য ছোটখাটো নন, এককথায় ধাঁড়ি। আমাদের অ্যাপার্টমেন্টে এনার আগমন হয়েছিল গত শীতে। আমি শিওর্ ওটা একটাই ইঁদুর ছিল। সে এসে খালি 'হাওয়াইয়ান ব্রেড' খেত। কিছু খেত, কিছু ছিঁড়েখুঁড়ে রেখে যেত। আর তার খড়মড় আওয়াজে আমাদের 'লিভিং রুমে' থাকা অনিন্দ্যর ঘুমে প্রচুর ব্যঘাত ঘটতো। আমরা ভাবলুম 'লিভিং রুমে'র ছন্নছাড়া অবস্থা-ই বুঝি গনেশ বাবাজীর বাহনটিকে আহ্বান করে নিয়ে এসেছে। লিভিং রুম ঝকঝকে-তকতকে করলাম খেটেখুটে। তাতেও ভবি ভুলল না। অগত্যা অ্যাপার্টমেন্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হল। তারা তো 'ও মাই গোস্' বলে সরেজমিন তদন্তে এল। তা ইঁদুর বাবাজী তো আর তাদের সুবিধেমতো দর্শন দেবেন না। কাজেই তারা তদন্তের দারা চিহ্নিকৃত দু-একটি যায়গাতে 'গ্লু ট্র্যাপ' বসিয়ে দিয়ে গেল। সত্যি বলছি, ও আঠার ফাঁদে যে ওই বুদ্ধিমান প্রানী পা দেবেনিকো সে আমি জানতুম। তাই হল। দিন সাতেক পরে তারা তাদের 'গ্লু ট্র্যাপ' নিয়ে ব্যাক টু প্যাভিলিয়ন আর তারি মাঝে আমাদের আরও কিছু 'হাওয়াইয়ান ব্রেডে'র পঞ্চত্বপ্রাপ্তি। তারপর কিসে ইঁদুর গেল জানো? এটা বলতে পারলে তোমায় ইঁদুর-বিভূষণ উপাধিতে ভূষিত করব। কর্তৃপক্ষ কয়, গাছের পাতা বেরেছে বলে ইঁদুর আসছে। আমরা হেঁসে উড়িয়ে দিলাম তখনকার মত। কিন্তু না, গাছের পাতা ছাঁটার পর থেকেই ইঁদুর উধাও। ইঁদুর বাবাজী কি গাছ বেয়ে আমাদের অ্যাপার্টমেন্টে আসত নাকি? পুরো বেকুব বনে গেছি কিন্তু।
ReplyDeleteঅ্যামেরিকান ইঁদুর, কীসে আসে কীসে যায় ভগবানই জানেন। আর ওই গ্লু ট্র্যাপের প্রহসনটা আমার আরেক বন্ধুর বাড়িতেও হয়েছিল। যাইহোক, আপদ যে বিদায় হয়েছে তাই যথেষ্ট।
Deletegechho indur hoy. besh boro size. amader barite ekbar berale chhana perechilo, tader ekti k chokh photar agei khub sombhoboto orom ek gechho indur kheye gechilo.
Deletema atleast serokom e bolechilo amay.oder ja size hoy, ami shune aschorjo hoini ektuo.
ওরে বাবা হিয়া। গেছো ইঁদুররা গাছেই থাকুন, আমাকে ভুলেও দর্শন না দিন, এই প্রার্থনা করি।
Deletetomar ekta dialogue e ami abar kore tomar fan hoye gelam. amar o etai mone hoy.. baba go, amar aarshola ta mere dao na go! :(
ReplyDeleteami 100 bhaag bujhte parchhi tomar moner durobostha ta. tobe finally je foring e namate perechho, sejonnoi congrats. ami hole bhNyaa kore kede ditam, r ma k phone kore aro kNaadtam :)
আত্রেয়ী, কত দুঃখে যে কাঁদিনা যদি জানতে।
Deleteoi odbhut pranita dekhe tumi swosti pele??tumi to bhoyonkor sahosi kuntaladi!! ami hole o borong idur er theke oirokom ekta prani je urte pare taakei beshi bhoy petam (ei re, kono idur abar eta shune fello na to?)
ReplyDeleteইঁদুরকে হেলাছেদ্দা কোরোনা স্বাগতা। গণেশঠাকুরের বাহন বলে কথা
Deletekintu, amader barite ele ki korte Kuntala di?
ReplyDeleteamar barir pashe ekta porobari, r poro jomi achhe, jeta ke jomi na bole jongol bolai shreyo. to tar kolyane amader barite arshola,tiktiki,bolta,shnuyopoka kichhur e obhab nei.kochi indur ra to sobsomoyei doure berachche.borshakale saap o dhoke,barite kamini gachh achhe kina!:)
roj sokale amar ghum bhange thok-thok shobde. bhor bela ekta kath thokra knacher janlay toka mere amar bhhorer khasa ghum tar 12 ta bajay.majhe majhe ma ok bhari boke dey, kintu o bishes patta dey na.
tobe indur gulo khub kharap na. amar khat- ta order diye banano, tate paya nei kono,bodole chaka achhe sudhu.mati theke khub beshi hole 10 inch moto unchu hobe.indur gulo kintu tabole khate uthe asena. matitei douroy.ami to moshari chharai dibyi shuye thaki.bhoy kore na oto.
r chhade gele badur dekhte pabei asha kora jay.ora obishyi ghore dhoke na. chamchike rai dhoke sudhu.
r amar dharona,khujle ekta duto bhut o pawa jete pare barite. tobe tara keu e bhoyanok noy, casper er moto hobe bolei mone hoy. :)
oh, bham r gondhogokul ta miss kore gechilum. gondhogokul barir pash diye ghure beray jokhon tokhon payes payes gondho beroy. bejir moto dekhte almost. ektu boro hoy size a. dekhecho? se bhari mojar jinis!
ReplyDeleteআমার তো এক্ষুনি তোমাদের বাড়ি যেতে ইচ্ছে করছে গো হিয়া। কী সুন্দর করে বর্ণনা দিয়েছ। এতরকম গাছপালা, পশুপাখি, ইঁদুর বাদুড়, কামিনী গাছ...গল্পের মতো তো পুরো।
Deletegolpo holeo sotti! :)
Deleteamar onek bondhu rai amader barite ese thekechhe,thake.adda marar jonyo dibyi jayga amader bari-ta. kintu rate-r dike onekei bhoy peyechhe. naki onek rokom bhuture shobdo shona jay. amar to abar osab na shunlei ghum ta bhalo hoy na. :P