ওয়ার্ম আপ পোস্ট
গত চব্বিশ ঘণ্টা আমি অবান্তর থেকে ছুটি নিয়েছিলাম।
ছুটি মানে একেবারে ছুটি। লিখিনি, লেখার পাঁয়তারা কষিনি, কমেন্ট পড়িনি, কমেন্টের
উত্তর দিইনি। তবে যেটা করে (বা না করে) নিজেকে নিজে সবথেকে বেশি ইমপ্রেস করে
দিয়েছি সেটা হল স্ট্যাটস চেক। ক্ষণে ক্ষণে আপনাদের চলনগমনের দিকে তাকিয়ে গালে হাত
দিয়ে বসে থেকে ফোঁসফোঁস করে দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলিনি। আমাকে চিনলে বুঝতে পারতেন এটা
করতে আমাকে কতখানি সংযম খরচ করতে হয়েছে।
তবে এই অসাধ্যসাধনটা আমি একা একাই করে ফেলেছি বললে
ডাহা মিথ্যে বলা হবে। আমার আলসেমি আর ফাঁকিবাজি তো ছিলই---সবসময়ই থাকে, কেঁদেকেটে হাতে
পায়ে ধরলেও তারা আমাকে ছেড়ে যেতে রাজি হয় না কিছুতেই---কিন্তু এখানকার আবহাওয়াটা
দেখলে আপনারা বুঝতে পারতেন এখন আকাশের থেকে চোখ ফিরিয়ে স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে
থাকাটা কতটা কঠিন। সামারের আপদ বিদেয় হয়েছে, গাছের পাতায় রঙের ছিটে ধরতে শুরু
করেছে, পাগলপারা হাওয়া বইছে যখনতখন আর বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে নামলেই বজ্রবিদ্যুৎ সহ
বৃষ্টি। এই নিয়ে পরপর তিনদিন হল। প্রথম দুদিন পাত্তা দিইনি, কিন্তু তারপর এমন
অপরাধবোধ হল যে শেষদিন ঘর থেকে বেরিয়ে খানিকটা মাথা ভেজাতেই হল।
যেই না ভেজানো অমনি দেখি নাক সুড়সুড়, গলা খুশখুশ,
মাথা ভারভার। শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতাটা একেবারে যমের দোরে গেছে। জঘন্য।
আত্মজীবনী ভালোলাগেনা মুখ ফুটে স্বীকার করার পর
থেকেই কেবল আত্মজীবনী হাতে আসছে। আর এমন সব আত্মজীবনীই আসছে যারা আমার আগের
মতামতকে কান ধরে নিল-ডাউন করিয়ে খাতার পাতায় ১০০ বার লিখিয়ে নিচ্ছে “আর কখনো না
জানিয়াশুনিয়া মন্তব্য করিব না”। দুদিন আগে আন্দ্রে আগাসির ‘ওপেন’ শেষ করলাম। আমি
বিচলিত, স্তম্ভিত, মুগ্ধ। এ মলাট থেকে ও মলাট পর্যন্ত বইটা আমাকে কলার ধরে টেনে
বসিয়ে রেখেছিল। অসাধারণ এক জীবনের গল্প, অসাধারণ করে বলা। বইটা না পড়ে থাকলে পড়ে
দেখতে পারেন। খারাপ লাগার সম্ভাবনা কম।
বইটা আমাকে কত বেশি ছুঁয়েছে সেটার প্রমাণ হল
আন্দ্রে আগাসিকে আমার কোনোদিনও ভালোলাগত না। ভালো না লাগার সঙ্গে টেনিসের কোনো
সম্পর্ক নেই। ভালোলাগত না কারণ লম্বা চুল, কানে দুল, উইম্বলডনের শতাব্দীলালিত
দুগ্ধনিভ প্রেক্ষাপটে নীল ডেনিমের উদ্ধত গোচোনা---আমার ভালোলাগার কথাই নয়। ভিড়ের
মধ্যে আলাদা হয়ে থাকা ব্যক্তিত্ব আমার সহ্য হয় না। এ আলাদার কতখানি সত্যি আর
কতখানি শাক দিয়ে প্রতিভার অভাবকে ঢাকার চেষ্টা, সে নিয়ে সন্দেহ হয়।
‘ওপেন’ আমার সে সন্দেহ ঘুচিয়ে দিয়েছে। ওই উড়ন্ত চুল
আর চোখঝলসানো পোশাকের আড়ালের যে আন্দ্রে, আমি অফিশিয়ালি তার ফ্যান হয়ে গেছি।
চিরদিনের মত।
গুগল ইমেজেস থেকে
hmmm ..portei hobe mone hacche
ReplyDeleteহ্যাঁ রে, পেলে পড়ে নিস। খুবই ভালো।
Deleteজানতাম:) যেদিন দেখলাম অবান্তরে ওপেন বইটার ছবি, সেদিনই ওই আত্মজীবনী-বিরোধী ব্লগটার কমেন্টে লিখবো ভাবছিলাম। তারপর ভাবলাম আপনার বই পড়ার মজাটা কেড়ে নেব কেন? পড়ুন তো আগে।
ReplyDeleteসিরিয়াসলি ভালো বই অনির্বাণ। আমি আমার কথা ফিরিয়ে নিচ্ছি।
Deleteei boi ta samporke kichhudin agei porlam, to read list-e achhe. apatoto amio "the help" porchhi! kichhudin age cinema ta dekhe besh bhalo laglo tai boita pora shuru korlam. bhadromohilar galpo bolar emon-i mohima, je cinema ta dekha satteo (arthat galpo ta jana satteo) boita chharte parchhi na.
ReplyDeleteআরে আরে মিলে গেছে রুচিরা! আমি অবশ্য সিনেমাটা দেখিনি। দেখব'খন।
DeleteTumi Agassi-dada'r fan hoye gele? Amar kintu Steffi-didi keo boddo bhalo lagey :-)
ReplyDeleteTobe in general ami autobiography'r fan. Jodio bolte badhyo hochi banglay autobiography temon bhalo nei jemon english e ache. "Chhelebela" ar "Jokhon chhoto chilam" chhara amar bangla atmokahini bhalo lage na. "Indian Pilgrim" ar "Indian Struggle" ke ami english er modhyei dhorchi.
ওপেন-এর মতো আত্মজীবনী লিখলে আমার ফ্যান হতে বাধা নেই। আমি বেশি আত্মজীবনী পড়িনি, পড়তে শুরু করব এবার।
Delete