মিষ্টি অমলেট





অবশ্য আপনাদের ইচ্ছে হলে Omelette à la Confiture ও বলতে পারেন। শেষ শব্দটা কী করে উচ্চারণ করতে হয়, আমার কাছে জানতে চাইবেন না যদিও।

এই অমলেটটার কথা আমি প্রথম জানতে পারি আমার এক বন্ধুর কাছ থেকে। অমলেটটার কথা বলার আগে বন্ধুটির কথা একটু বলতে হবে। এই বন্ধুটির থেকে অলস লোক আমি জীবনে আর দেখিনি। অনেকেই দেখেনি। দিল্লি আই এস আই-এ অলসতার কম্পিটিশনে গোটা বারো সেরা কুঁড়েকে হারিয়ে এ ফার্স্ট হয়েছিল। বান্টি সাক্ষী। কী কী বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে বিজয়ী বাছা হয়েছিল জানতে চাওয়ায় বান্টি বলেছিল, অতশত মনে নেই, গোটা এক সেমেস্টার ধরে প্রতিযোগীদের পরীক্ষা করা হয়েছিল নাকি। হাড্ডাহাড্ডি কম্পিটিশন। শেষে বাকি ছিল দুজন। আমার এই বন্ধু আর আরেকজন। শেষে সেমেস্টার শেষ হওয়ার আগের দিন আমার বন্ধু, দ্বিতীয় কুঁড়েকে দিয়ে মেসের কুলার থেকে এক বোতল জল ভরিয়ে এনে কুঁড়েমিতে নিজের অবিসংবাদিত শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছিল।

যাই হোক। এবার অমলেটটার সঙ্গে আমার কী করে পরিচয় হল সে ব্যাপারে আসা যাক। আমি একবার এই কুঁড়েপ্রবরের বাড়িতে ঘুরতে গিয়েছিলাম। ধরেই নিয়েছিলাম সে ক’দিন ইটিং আউট-ই ভরসা। কিন্তু আমাকে চমকে দিয়ে বন্ধু প্রথম দিন ব্রেকফাস্টেই এই অমলেটটা করে খাইয়েছিল। ব্যাপার দেখে আমি আকাশ থেকে পড়ায় খুব লজ্জা পেয়ে বলেছিল, “আরে লীলার বইতে রেসিপি দেওয়া আছে, হেবি সোজা।”

লীলার বই? সে কি, লীলা মজুমদারের লেখা বাংলায় একখানা ভয়ানক ভালো কুকবুক আছে জানেন না? এই দেখুন বইয়ের ছবি। সঙ্গে ফাউ পাঠিকারও।



যদিও আমি আর আমার বন্ধু এটাকে ‘লীলার অমলেট’ বলেই ডাকি, পরে জেনেছি এটার একটা ফ্রেঞ্চ নামও আছে। ওই যে গোড়াতেই যেটা লিখেছি। নাম শক্ত হলে কী হবে, রেসিপিটা সত্যি সোজা। খেতেও মজার। ইচ্ছে হলে করে দেখতে পারেন।

মিষ্টি অমলেট রান্নার জন্য লাগবে

ডিম ভাজার জন্য পরিমাণমত তেল বা মাখন

একটা বা দুটো ডিম

ডিম পিছু এক বড় চামচ নিজের পছন্দের জ্যাম বা জেলি। জেলি হলে সমস্যা নেই, জ্যাম হলে একটা ছোট পাত্রে নিয়ে স্টোভটপ বা মাইক্রোওয়েভে আগে থেকে গলিয়ে নিতে হবে। যাতে অমলেটের ওপর ছড়াতে সুবিধে হয়।

কী করে করবেন

প্রথমে একটা পাত্রে ডিমগুলো ফেটিয়ে নিন। নুন দেবেন না। আর আপনি যদি মিষ্টিপ্রিয় হন তাহলে সামান্য চিনি দিয়েও ফেটাতে পারেন।

এবার পাত্রে তেল বা মাখন গরম করে ফেটানো ডিমটা দিয়ে দিন। আঁচ নিচের দিকেই রাখা ভালো, সামলাতে সুবিধে হবে। না হলে অমলেটের ওপরটা সেট হওয়ার আগেই নিচ দিকটা পুড়ে যেতে পারে।



ওপর দিকটা যখন প্রায় হয়ে এসেছে তখন জেলি (বা গলানো জ্যাম) চামচে করে নিয়ে, ডিমের একদিকে লম্বা করে ছড়িয়ে দিন।



এবার উল্টোদিক হাতা দিয়ে সাবধানে খুঁচিয়ে তুলে জ্যাম লাগানো দিকটা ঢেকে দিলেই, ব্যস। অমলেট রেডি। প্লেটে নিয়ে খেলেই হল।





Comments

  1. সর্বনাশ করেছেন! জ্যাম আর জেলির মধ্যে তফাত কি শিগগির বলুন তো, এই অজ্ঞতাটা অন্য কারুর কাছে ধরা পড়ে যাওয়ার আগে! ওই বইটা আমার মায়েরও আছে, অনেক পুরনো এডিশন অবিশ্যি।

    ReplyDelete
    Replies
    1. দেখুন এই বিষয়ে অনেক বিশেষজ্ঞের মতামত পাবেন, আমি সে সব পড়েটড়ে যা উদ্ধার করেছি সেটা হল জেলি ব্যাপারটা জ্যামের থেকে নরম। মানে আমরা যে কিষাণ মিক্সড ফ্রুট খাই, যেটা পাউরুটিতে লাগাতে গেলে পাউরুটি ছিঁড়ে যায় কিন্তু কিষাণ টসকায় না, সেটা হল গিয়ে জ্যাম। আর যেটা হেলায় চামচে নিয়ে পাউরুটিতে মাখিয়ে ফেলা যায় সেটা হল জেলি।

      Delete
  2. chamatkar :)
    mane omelette r post dutoi!
    bai ta to cultivate karte hachhe mashai :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ সায়ক। বইটা কালটিভেট করার মতোই।

      Delete
  3. Arre. Ei boita Dillite amar local guardian er moto. Pork vindaloo theke aloo chhechki...sob ei dekhe banai ami.

    Maaye sausage bhajar recipe-o dewa achhe. :D

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহা, লোকাল গার্জেন ব্যাপারটা দুর্দান্ত বলেছ বিম্ববতী। বইটার আরও অনুরাগীর খোঁজ পেয়ে বেশ ভালো লাগছে।

      Delete
  4. Kuntaladi, knurer competition-er golpota besh mojadar laglo :)....tobe aami oi dwitiyo howa knurer pokkhe...ota bad umpiring-e haar hoyechhe :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহা শ্রমণ, আমি ভাবছিলামই গল্পটাতে তোমার প্রতিক্রিয়া শুনলে ভালো হয়। গুড টাইমস, কী বল?

      Delete
    2. hya, sei somoytai besh bhalo chhilo , Bantir dibbi....:)

      Delete

Post a Comment