Things I am Loving
কায়িক পরিশ্রমঃ উঁহু, ভুল ব্লগে এসে পড়েননি। আর
আপনার চোখও নতুন করে খারাপ হয়নি। আমার মাথা খারাপ হয়েছে কিনা সে ব্যাপারে যদি
সন্দেহ হয় তাহলে আমি আশ্বস্ত করতে পারি যে সেটাও নয়। ব্যাপারটা হচ্ছে, কিছুদিন ধরে
আমি সত্যি সত্যি কায়িক পরিশ্রমের মাহাত্ম্য উপলব্ধি করতে পারছি। সময় কাটাতে,
ক্যালরি ঝরাতে, ডিপ্রেশন ভোলাতে, সবকিছুর থেকে বেশি কাজ দেয় সাবেকি গায়ের খাটুনি।
বিশ্বাস না হলে হাতে কলমে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। তামাদি প্রেম ভোগাচ্ছে? এক
শিশি ‘ইজি’, আধ বালতি জল আর খানতিনেক চিটচিটে নোংরা সোয়েটার নিয়ে কলতলায় চলে যান,
প্রেম বাপ বাপ বলে পালাবার পথ পাবে না। পড়াশোনা মাথায় উঠেছে? খাতা খুললেই থিওরেমের
বদলে হাত থেকে ভসভসিয়ে বস্তাপচা বিরহের কবিতা বেরোচ্ছে? ঘাবড়াবেন না, বইখাতা বন্ধ
করে উঠে পড়ুন। আশেপাশে তাকান, যে জামাকাপড়গুলো গোল্লা পাকিয়ে টিপ প্র্যাকটিস করার
মতো ঘরের এদিসকওদিক ছুঁড়ে ছুঁড়ে ফেলেছেন, সেগুলো ভাঁজ করে ফেলুন। নয়তো মা’কে গিয়ে
জিজ্ঞাসা করুন, বাজার থেকে কিছু এনে দিতে হবে কি? নাকি ঘরটা ঝাঁট দিলে ভালো হয়? মা
ভীষণ ভয় পেয়ে যেতে পারেন, তাঁকে ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলে ঝাঁটা হাতে নেমে পড়ুন। দেরি
করবেন না। ঘরের জঞ্জাল তো পরিষ্কার হবেই, সঙ্গে সঙ্গে মাথার ভেতরের আবর্জনাও দূরীভূত
হবে।
এই বার্ধক্যে পৌঁছে বুঝতে পারছি, ছোট থেকে সবাই
যে কানের কাছে পাখিপড়া পড়েছে আর ঠারেঠোরে বুঝিয়েছে যে ভাবুক মানেই ভালো, সেটা কী
পরিমাণে ভুল আর ক্ষতিকারক। আমি আর সে ভুল করছি না, নিজের ছেলেমেয়ে দাঁড়াতে শিখলেই হাতে
ন্যাতাবালতি ধরিয়ে দেব। ফুড ফর ওয়ার্ক। খবরের কাগজ রিডিং পড়ে পাড়ার লোকের কাছে
যতখুশি হাততালি পাও কিংবা অংকে ঝুড়িঝুড়ি নম্বর আনো; ভাত ডাল ফুচকা আইসক্রিম পেতে
হলে ঘরের কাজ করতে হবে। ব্যস।
মেমোরি গেমঃ গতকাল একটা জন্মদিনের পার্টিতে
গিয়েছিলাম। কলকাতা স্টাইল ফিশফ্রাই, মুসুরডাল, আলুপোস্ত, পাবদা মাছের কালোজিরে
দিয়ে ঝাল, পাঁঠার স্বর্গীয় ঝোল, নলেন গুড়ের কামরাঙা সন্দেশ আর বিগ চিল ক্যাফে থেকে
আনা চকোলেট ডবল ডেকাডেন্স কেকের ইয়াবড় একটা টুকরো শেষ করে সবে গদির ওপর এলিয়ে পড়ে হাঁফ ছাড়ছি, এমন সময় কে যেন সত্যজিৎ রায়ের নাম বলে উঠল। এই হয়, যতক্ষণ রান্না
হচ্ছিল, ততক্ষণ আর্টের কথা ভুলেও কারও মাথায় আসছিল না। ততক্ষণ খালি ছুতোয়নাতায় ঘুরে
ঘুরে রান্নাঘরে যাওয়া আর ফুটন্ত ডেকচির ঢাকনা তুলে তুলে দেখা, ভাত হতে আরও কত দেরি।
যাই হোক, সত্যজিতের কথা উঠতে অরণ্যের দিনরাত্রির কথা উঠল, অরণ্যের দিনরাত্রির কথা
উঠতে দুলির আবলুশ রঙ খোলা পিঠের কথা উঠল। কেউ একজন বলল, কোথায় নাকি সেই পিঠের একটা
পোস্টার দেখেছে। দাম জিজ্ঞাসা করতে গিয়েছিল, ছ্যাঁকা খেয়ে পালিয়ে এসেছে। তখন কেউ
একজন বলল, দূর দূর, অরণ্যের দিনরাত্রির পোস্টারই যদি লাগাতে হয় তবে দুলির পিঠ না
লাগিয়ে জঙ্গলের মধ্যে শতরঞ্জি পেতে গোল হয়ে বসে মেমোরি গেম খেলার দৃশ্যটার লাগানো
উচিত।
যেই না বলা, খেলার কথা সবার মাথায় এসে গেল আর
আমরাও দেরি না করে একেকজন মূর্তিমান সৌমিত্র, শমিত ভঞ্জ, রবি ঘোষ, শুভেন্দু,
শর্মিলা আর কাবেরী বসু হয়ে মাঠে নেমে পড়লাম। খেলা যা জমেছিল সে আর কী বলব। সবার
ভুরু দেখতে দেখতে কুঁচকে গেল, নাকের পাটা ফুলে উঠল, বাইরে সূর্যের মরা আলো
বারান্দা ছেড়ে পালালো তবু কারও চায়ের কথা মনেই পড়ল না। ঝাড়া দুঘণ্টার মরণপণ লড়াই।
ধন্য বটে লোকজনের স্মৃতিশক্তি। খেলা থামার পর অটো ধরে বাড়ি ফিরতে ফিরতেও সবাই খেলার কথাই বলতে লাগল। আমার তো এমন অবস্থা হয়েছিল যে কাল মাঝরাতে “পাওলো রসি,
হন্ডা সিভিক, ইদি আমিন...” বলে চেঁচিয়ে ঘুম ভেঙে ধড়মড়িয়ে উঠে বসেছিলাম।
আপনারা শেষ কবে মেমোরি গেম খেলেছেন? না খেলে
থাকলে সামনের উইকএন্ডে বন্ধুবান্ধব জুটিয়ে খেলে দেখতে পারেন। দারুণ মজা হবে।
উৎস গুগল ইমেজেস
পরিশ্রমের কথাটা ১০০% খাঁটি। ওটা আমিও দেখেছি, যেকোনো রকমের দুঃখ ভোলাতে পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই। মেমরি গেম শেষ কবে খেলেছি মনে পড়েনা ... একবার ট্রাই করা যেতেই পারে।
ReplyDeleteকরে দেখুন, পস্তাবেন না।
Deleteযত দুঃখই থাকুক, খুব জোরে হাঁটলে আমার দুর্দান্ত লাভ হয়। মানে, শীতকালে সোয়েটার ছাড়াও ঘাম ঝরানোর মত জোরে। মাঝপথে থেমে ভাবনাচিন্তা করলে হবে না।
ReplyDeleteএছাড়াও, আমার বেশিরভাগ ব্লগপোস্টের বিষয়বস্তু মাথায় এসেছে ঐ হাঁটতে হাঁটতেই।
হ্যাঁ হাঁটা খুব ভালো জিনিস। তুমি হাঁটতে থাক, মন ভালো রাখ, ভালো ভালো আরও অনেক ব্লগপোস্ট লেখ, এই কামনা করি।
Deleteপরিশ্রমের er bepartay I also agree...রান্না করলেও দুঃখ কমে.. :P
ReplyDeleteBhalo ranna korle aro ananda hoy je "bah ebar eta khete parbo" :D
Deleteরান্না সত্যি থেরাপিউটিক। যে সময়টা গেল, তার আউটকাম চোখে দেখা গেল, পেটে খাওয়া গেল, আর কী চাই?
DeletePorisrom er byapar ta 100000% ekmot. Ami oboshyo ektuo bhabuk prokritir noyi, biroho-tiroho o amar hoyeche bole mone pore na, tobe ami in general sob somoyei kono kichu kaj niye byasto thaki. Ar taite aro energy bare, mone shanti bare, bhalo ghum o hoy. Ar sob theke boro katha ekta satisfaction thake je "bah aj ei ei gulo korlam".
ReplyDeleteBTW, amader ekta kukur esheche kal. Tar naam Bebe. Tai aj sokale 4 jon ke khabar diye, hatiye, etc mone hochhe zoo keeper hoye gechi. Amake koshto kore ar "kaj khujte" hoye na barite, kaj ekta je kono kore nilei hoy :)
Memory game o amar oti priyo khela :)
কী ভাগ্যিস বেবো নাম রাখনি রিয়া। তোমাকে দেখে আমি সত্যি সত্যি অভিভূত হয়ে যাই রিয়া মাঝেমধ্যে। তুমি সত্যি করিৎকর্মা।
DeleteHehe, naam ta o niyei eshechilo shelter theke, tai amra ar change korini. Kukur der naam change kora khub hyapa. :)
Deletetui ato bhalo likhish ki kore???
ReplyDeletekintu tui ki dulir websiteta dekhechish...???marattok
ReplyDeletelinkta diei dilam http://www.simigarewal.com/ ....;)))
Deleteভাই, দুলির রাদেভুঁ বলে যে সাক্ষাৎকারের অনুষ্ঠানটা হত, সেটা দেখেছি মিনিট পাঁচেক, আর কিছু দেখার সাহস নেই। তোর আমার লেখা ভালো লাগে জেনে অতীব আনন্দ পেলাম। থ্যাংক ইউ।
Deleteporisrom kora sottii khub bhalo. kintu mushkil holo seta mathate thakleo kaj-e ami kichhutei kore uthte parina. ami asombhob arampriyo, tobe tomar er ager ekta post e pora knureder theke hoito ektu better :-). kintu sotti porisromer ar kono bikolpo nei.
ReplyDeleteMemory game khub bhalo khela, tobe ami ete last er dik theke first , second hoi ar ki . :-D.
tomar internet connection bhogale to mushkil, Abantor e bhalo bhalo post gulo cholbe ki kore? ar sudhu tumi pathoker comment er jonye noi pathoko je tomar comment er jonye udgrib thake. jato taratari sambhob e samosyar somadhan korie nao please.
আরে ইচ্ছাডানা, সমস্যার সমাধান আমার হাতে থাকলে তো হয়েই যেত, সে যে অদৃষ্টের হাতে। দেখা যাক, কী করা যায়।
Deleteআমি জীবনে বেশিরভাগ ব্যাপারেই লাস্টের দিক থেকে ফার্স্ট হই, কাজেই তাতেই খুশি হতে শিখে নিয়েছি।
মেমরি গেম...বাঙ্গালির শ্রেষ্ঠ টাইমপাস। পিকনিক হোক বা জন্মদিন- কলকাতা হোক বা ক্যালিফোর্নিয়া- মেমোরি গেম আর অরণ্যের দিনরাত্রির জম্পেশ যুগল কখোনো মাঠে মারা যায় না। :)
ReplyDeleteযা বলেছ পৌষালী। হাই ফাইভ।
Delete